সংগীতশিল্পী মিতা হকের চল্লিশার টাকা গণস্বাস্থ্যকে দান
গত ১১ এপ্রিল রাজধানীর একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন দেশের নন্দিত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হক। সম্প্রতি গায়িকার মৃত্যুর ৪০ দিন পূর্ণ হয়। সেই চল্লিশার জন্য জমাকৃত পুরো টাকা গণস্বাস্থ্যের নগর ডায়ালাইসিস সেন্টারে দান করে দিয়েছে তার পরিবার।
রোববার (২৩ মে) দুপুরে মিতা হকের কন্যা সংগীতশিল্পী ফারহিন খান জয়িতা গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাতে তার মায়ের চল্লিশার এই টাকা তুলে দেন।
এসময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী মিতা হকের একমাত্র সন্তান জয়িতা তার মায়ের চল্লিশার খরচের পুরো টাকা ডায়ালাইসিস সেন্টারে অসহায় ডায়ালাইসিস রোগীদের সেবায় দান করেছেন। আমরা গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারের পক্ষ থেকে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সকল দান আয়কর মুক্ত।’
মিতা হকের কন্যা জয়িতা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘কিডনি রোগীদের জন্য ডায়ালাইসিস অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ডায়ালাইসিস করতে অনেক টাকা লাগে। যা সব পরিবারের পক্ষে যোগাড় করা সম্ভব হয় না। আমার জানামতে বাংলাদেশে সবচেয়ে কম খরচে ডায়ালাইসিস করা হয় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে। এখানে ডায়ালাইসিস করতে আসা গরিব রোগীদের পাশে দাঁড়াতেই আমি উদ্যোগটি নিয়েছি। এতে যদি একজন মানুষেরও উপহার হয় আমার চেষ্টা সার্থক হবে।’
উল্লেখ্য, মিতা হকের জন্ম ১৯৬২ সালে। ১৯৯০ সালে বিউটি কর্নার থেকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম রবীন্দ্রসংগীতের অ্যালবাম ‘আমার মন মানে না’। সব মিলিয়ে প্রায় ২০০টি রবীন্দ্রসংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। তার প্রায় বিশটি অ্যালবামের বেশির ভাগই প্রকাশিত হয়েছে কলকাতা থেকে। ‘সুরতীর্থ’ নামে একটি গানের স্কুলও রয়েছে তার।
সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার মিতা হককে একুশে পদকে ভূষিত করে। এছাড়াও শিল্পকলা পদক, বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার, চ্যানেল আই রবীন্দ্র মেলা পুরস্কার এবং ভারত থেকে অনেক সম্মানজনক পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।