‘বাচ্চাগুলো তো ভয়ে কাঁপছে, এটা উৎসব, এটা কেমন উদযাপন!’
শব্দবাজি ফাটানো নিষিদ্ধ। তবে দীপাবলি-কালীপুজা আসলে কে কার কথা শোনে! পুলিশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে খোদ কলকাতা শহরের বুকেই অনেকেই শব্দবাজি ফাটান। এবারও তল্লাশি চালিয়ে কালীপুজার ঠিক আগে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে ৫১৯.৭ কেজি শব্দবাজি।
তবুও রেহাই মেলেনি। শব্দদানবের অত্যাচারে তিতিবিরক্ত অভিনেত্রী রূপাঞ্জনা মিত্র ও তার পরিবার। পোষ্যদের শব্দবাজি থেকে বাঁচানোর জন্য শেষপর্যন্ত পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি।
ফেসবুক লাইভ করেও শব্দবাজি নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিতে দেখা যায় রূপাঞ্জনাকে। তিনি বলেন, ‘এখন ঘড়িতে রাত ১০.৪০ বাজে। বিকেল ৫টা থেকে ঠিক আমার পাশের বাড়িতে…। (আমার কথা শোনা যাচ্ছে কিনা বলুন, এটা নিয়ে আমি দ্বিতীয়বার লাইভ করছি।) এতটাই আওয়াজ হচ্ছে যে বাড়িতেও কাউকে কোনও কথা বলা যাচ্ছে না। একে অপরের কথাও শুনতে পাচ্ছি না।’
এরপরই তার সঙ্গে লাইভে আসতে দেখা যায় স্বামী রাতুলকে। তিনি বলেন, ‘এত শব্দদূষণ হচ্ছে, পাটুলি পুলিশ স্টেশনে ফোন করা সত্ত্বেও কেউ ফোন ধরছেন না। ৬ ঘণ্টা ধরে চলছে, ব্যান্ড পার্টি, শব্দবাজি সবই চলছে।’
আরও পড়ুন
এরপর রূপাঞ্জনা বলেন, ‘আমরা ৬ ঘণ্টা ধরে বাড়িতে একে অপরের কথা শুনতে পাচ্ছি না, কথা বলছি না। এটাকে কী বলব! এটা কেমন সেলিব্রেশন! শুধুই শব্দ, শব্দ আর শব্দ।’
লাইভের মাঝেই দেখা মেলে অভিনেত্রীর ছেলে রিয়ানের। সে বলে ওঠে, ‘মরে যেতে ইচ্ছে করে এসব শুনে…।’ এসময় অভিনেত্রী তাকে বাধা দিয়ে বললেন, ‘এইরকম বলে না..’।
এরপর রূপাঞ্জনা বললেন, ‘বাচ্চাগুলো ভয়ে রয়েছে। বুঝতে পারছেন এখানে কী চলছে!’ সেসময় পোষ্যগুলিকে ভয়ে বিছনায় বসে থাকতে দেখা গেল। কাঁপতে দেখা যায়।
দর্শকদের উদ্দেশ্যে রূপাঞ্জনা এরপর প্রশ্ন করেন, ‘আপনাদের জানা আছে, এটা থেকে বাঁচতে গেলে কী করতে হবে! এই অত্যাচার থেকে কীভাবে বাঁচব! এত অত্যাচার করছেন কেন? আপনারা শুধু নিজেদের কথাই ভাবছেন! এত স্বার্থপর হলে কীভাবে চলবে? আলোর উৎসব কেন বারবার ভয়ের উৎসব হয়ে যাচ্ছে? এত মিউজিক হচ্ছিল, যে বাড়িটাই কাঁপছে। পাশের বাড়িতেই এসব চলছে। এভাবে সমাজে থাকা যায়। পাশের মানুষকে অন্তত বুঝব। একটু তো সহানুভূতিশীল হবেন। ৬ ঘণ্টা ঘরে আমি তো কানে শুধুই....। আমার তো মনে হচ্ছে বড় মিউজিক সিস্টেম ভাড়া করে তাতে শুধুই মেডিটেশনের মিউজিক চালাই। এসব কী হচ্ছে! মানু ষতো অনেক সমস্যার মধ্যেও থাকতে পারে। এমন কিছু করবেন না, যাতে পাশের মানুষজন হয়রান হয়ে যান। আমি বাচ্চাগুলোকে কীভাবে বাঁচাব? আমরা যদি নিজেদের পাল্টাতে না পারি, খুব মুশকিল। কী আর বলব, দেখি কতক্ষণ এটা চলে…।’
ফেসবুক লাইভের পর শনিবারও রূপাঞ্জনা লেখেন, ‘গতকাল রাতে লাল বাজার থানার কন্ট্রোল রুমের নম্বরে ফোন করার পর তারা লোক পাঠায়। এরপর রাত ১২ টার পরে সব চুপ হয়ে যায়। আমরা বুঝলাম, বোধ হয় এবার একটু রক্ষা পেলাম। এরপর দেখা যাক....সিভিল রাইটসের লড়াই চলবে এভাবেই, আপনারা সঙ্গে থাকবেন।’
এনএইচ