এবারও অস্কারে মনোনয়ন অধরা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর
লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওকে কে না চেনেন—হলিউডের দাপুটে এই অভিনেতার অস্কার সম্পর্ক যেন ‘লাভ-হেট’ রিলেশন! দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মাত্র একবারই অস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এরপর প্রতিবারই শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে ৪৯ বছর বয়সী এই অভিনেতার; এবারও অস্কারে মনোনয়ন অধরা লিওর। অভিনেতার অ্যাকাডেমি-ভাগ্য কি ফিরবে না?
এদিকে মার্টিন স্করসিসির ‘কিলার্স অফ দ্য ফ্লাওয়ার মুন’ অস্কারে ১০টি চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছে। কিন্তু তালিকায় নেই ছবির প্রধান চরিত্রাভিনেতা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওর নাম। স্বাভাবিকভাবেই হতাশ লিওর ভক্তরা।
তবে লিও বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা এটা নিয়ে কোনও বিতর্কও হবে না। অথচ তিনি একবারই অস্কারে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৬ সালে ‘দ্য রেভারেন্ট’ ছবির জন্য। এছাড়া পাঁচ বার পেয়েছেন মনোনয়ন। কিন্তু অসংখ্য ভালো ছবিতে দাপিয়ে অভিনয় করেও পুরস্কার দূরে থাক, মনোনয়ন পর্যন্ত পাননি অনেকবার। সেই তালিকায় সাম্প্রতিক সংযোজন স্করসিসির বহুল প্রশংসিত ছবি ‘কিলার্স অফ দ্য ফ্লাওয়ার মুন’। তাই সিনেপ্রেমীরা চূড়ান্ত হতাশ।
অপরদিকে কিশোর বয়সেই অস্কারে মনোনয়ন পেয়েছিলেন লিও! সেটা ১৯৯৪ সাল। আগের বছর মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হোয়াট ইটিং গিলবার্ট গ্রেপ’ ছবিতে মানসিকভাবে অসুস্থ কিশোরের ভূমিকায় অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন তিনি। কিন্তু ‘টাইটানিক’ ছবি থেকে শুরু হয় তার অস্কার-দুর্ভাগ্য। জ্যাক নামের সোনালি চুলের এক শিল্পীর ভূমিকায় গোটা দুনিয়ার হৃদয় জয় করেছিলেন লিও। অথচ দেখা গেল ছবিটি পেয়েছে ১৪টি মনোনয়ন। যার মধ্যে ১১টিতেই জয়। সর্বকালীন রেকর্ড। অথচ লিও মনোনয়নটুকুও পেলেন না। হতাশায় সেবারের অস্কারের অনুষ্ঠানেই যাননি তিনি।
সেই শুরু। ‘ক্যাচ মি ইফ ইউ ক্যান’, ‘গ্যাংস অফ নিউ ইয়র্ক’, ‘দ্য ডিপার্টেড’, ‘রেভলিউশনারি রোড’ বহু ছবিতেই তাঁর মনোনয়ন ঘিরে জল্পনা থাকলেও শেষ পর্যন্ত লিও কোনওটিতেই নমিনেশন পাননি। ১৯৯৪ সালের পর একেবারে ২০০৫। ‘দ্য এভিয়েটর’ ছবির জন্য মনোনয়ন মিলল। বছর দুয়েক পর ২০০৭ সালে ‘দ্য ব্লাড ডায়মন্ড’ ছবিতে মনোনয়ন। এর পর দীর্ঘ অপেক্ষা। ২০১৪ সালে ‘দ্য উলফ অফ ওয়াল স্ট্রিট’ এবং ২০২০ সালে ‘ওয়ান্স আপ অন আ টাইম ইন হলিউড’ ছবির জন্য মনোনয়ন এলেও ২০১৬ সালে এসেছিল মাহেন্দ্রক্ষণ। অস্কার ওই একবারই উঠেছিল লিওর হাতে। তার আগে পরে কয়েকটা মনোনয়ন। প্রায় তিন দশক ধরে অটুট জনপ্রিয়তা। অথচ অস্কার এর বেশি স্বীকৃতি নেই!
এবার আশা জাগছিল ‘কিলার্স অফ দ্য ফ্লাওয়ার মুন’কে ঘিরে। ছবিতে এমন এক চরিত্রকে ফুটিয়েছেন যা একেবারেই অ্যান্টি হিরোর। আর সেই চরিত্রটি গড়ে তুলতে নিজেকে নিংড়ে দিয়েছেন লিও। কিন্তু তালিকা প্রকাশ হতেই দেখা গেল এবারও বাদ রুপালি পর্দার ‘জ্যাক’। কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও এমন অবহেলা কি সত্যিই প্রাপ্য জ্যাকের?
ভক্তরা বলছেন, এতে কী এসে যায়? লিওনার্দো এমন একজন অভিনেতা, যাঁর কোনও পুরস্কার কিংবা মনোনয়নের আর দরকার নেই। এত বছর ধরে যে ভালোবাসা তিনি পেয়ে এসেছেন, তার চেয়ে বড় পুরস্কার এমনকি অস্কারও নয়।
এমএসএ