আমি খুবই শঙ্কিত : সাফা কবির
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) রাতে নিজের ফেসবুকে একটি ছবি প্রকাশ করেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাফা কবির। মাথার কালো কেশগুলো ছেড়ে দেওয়া, পরনে কালো পোশাক, কাজল মাখা চোখ দুটো ছলছল করছে, কপালে লেখা লনলি, ডান পাশের গালে লেখা স্যাড, কাঁধের পাশে লেখা ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি, শরীরের আরো কয়েকটি জায়গায় এ ধরনের কিছু শব্দ শোভা পাচ্ছে। সবমিলিয়ে বিষণ্ণ অদ্ভুত এক ভঙ্গিমায় দেখা গেছে তাকে।
অভিনেত্রীর এমন হাল দেখে দর্শকদের মনেও শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। হঠাৎ এই রূপে কেন সাফা কবির? জানা গেছে, ‘ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ ডে’ উপলক্ষে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে বার্তা দিতেই ব্যতিক্রম সাজে হাজির হয়েছেন তিনি।
সাফা বললেন, ‘স্যাডনেস, লনলিনেস, ডিপ্রেশন, অ্যাংজাইটি— এই শব্দগুলো আমরা সচরাচর অনেকের মুখ থেকেই শুনি। কিন্তু এই কথাগুলোকে আমরা কতটা গুরুত্ব দেই? আমি এমন অনেক মানুষকে দেখেছি, যারা তাদের মেন্টাল হেলথ নিয়ে কথা বলতে চায় না।’
শঙ্কা প্রকাশ করে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘এমন অনেক মানুষের কথা শুনেছি, যারা বলেছেন এটা জ্বর বা কাশির মতো, যেটা মেডিসিন খেলে ঠিক হয়ে যাবে! আজ ওয়ার্ল্ড মেন্টাল হেলথ ডে। কিন্তু আমি খুবই শঙ্কিত, কারণ আমি জানি এই পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ আছে যারা মেন্টাল ডিসঅর্ডার বা মানসিক সমস্যায় জর্জরিত। এটা খুবই দুঃখজনক যে আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষই জানে না, ডিপ্রেশন কী, অ্যাংজাইটি কী বা এসব থেকে প্রতিকারের উপায় কী?’
সাফা কবির ব্যক্তিগত জীবনে অ্যাংজাইটি সমস্যায় ভুগেছেন। তা জানিয়ে এ অভিনেত্রী বলেন, ‘একটা সময় আমারও অ্যাংজাইটি অ্যাটাক হতো। আমি তখন সচেতন ছিলাম, আমার পাশের মানুষগুলোও তেমনই সচেতন ছিল। আমি ডক্টরের কাছে গিয়েছি। কিন্তু মেডিসিন দিয়ে অল্প সময়ের সাহায্য হলেও সমস্যাটা কিন্তু থেকেই যায়। আমাদের শারীরিক কোন সমস্যা হলে যেমন চিকিৎসা দরকার তেমনি দরকার মানসিক চিকিৎসারও।’
শুধু মুখে বলা নয়, কাজেও মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন এই তরুণ অভিনেত্রী। সম্প্রতি তার অভিনীত একটি নাটক প্রচার হয়েছে। যেটার নাম ‘বেড নাম্বার ৩’। এই নাটকে একজন চিকিৎসকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন সাফা, যিনি নিজেও মানসিক অবসাদে আক্রান্ত। ভিকি জাহেদ নির্মিত এই নাটকে তার সঙ্গে আছেন তৌসিফ মাহবুব।
নিজের সমস্যা থেকে বের হওয়ার জন্য নিজেকেই সমাধান বের করতে হবে। তা উল্লেখ করে সাফা কবির বলেন, ‘আমি মনে করি, নিজের সমস্যাগুলো থেকে বের হওয়ার জন্য নিজেরই সমাধান বের করা উচিত। উচিত আশেপাশের মানুষের সাহায্য নেয়া, প্রফেশনালসদের সাহায্য নেয়ার। মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানুন, নিজে শিখুন, অন্যকে শেখান এবং অবশ্যই তাদের পাশে থাকুন।’
এনএইচ