‘নায়ক’ সিনেমার চিত্রনাট্যের স্বত্ব সত্যজিৎ রায়ের
ভারতের অস্কারজয়ী নির্মাতা সত্যজিৎ রায়ের একেকটি চলচ্চিত্র, শিল্পের একেকটি নমুনা। ১৯৬৬ সালে বিখ্যাত এই নির্মাতা উত্তম কুমার ও শর্মিলা ঠাকুরকে জুটি করে নির্মাণ করেন ‘নায়ক’ ছবিটি। বিনোদন জগতে এক তারকার উত্থান-পতনের গল্পে সাজানো ছবির চিত্রনাট্য। সেই চড়াই উতরাইকে এক রেলযাত্রার মোড়কে পরিবেশন করেছিলেন চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সত্যজিৎ রায়।
সত্যজিৎ রায় পরিচালিত এবং আরডি বানশাল প্রযোজিত এই ছবির চিত্রনাট্যের স্বত্বের অধিকার কার? এই প্রশ্ন তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল প্রযোজক সংস্থা। ছবির চিত্রনাট্যের স্বত্বাধিকার চিত্রনাট্যকার সত্যজিৎ রায়েরই, চলতি বছরের মে মাসেই এই রায় ঘোষণা করে দিল্লি আদালতের সিঙ্গেল বেঞ্চ। বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সিঙ্গেল বেঞ্চের সেই রায় বহাল রাখল দিল্লি হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
সম্প্রতি ‘নায়ক’ সিনেমার চিত্রনাট্যের ভিত্তিতে ভাস্কর চট্টোপাধ্যায়ের লেখা একটি উপন্যাস প্রকাশ করেছে প্রকাশনা সংস্থা হার্পার কলিন্স। তারপরেই ওই প্রকাশনা সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করে ছবির প্রযোজক আরডি বানশালের পরিবার। তাদের দাবি, ছবির চিত্রনাট্যকার সত্যজিৎ রায় হলেও ‘নায়ক’ ছবির প্রযোজক হিসেবে স্বত্বাধিকার তাদেরই। কোনো তৃতীয় পক্ষ ‘নায়ক’ ছবি অবলম্বনে উপন্যাস লিখলে তা বানশাল পরিবারের অনুমতি ছাড়া প্রকাশ করতে পারবে না।
তারপরেই আদালতে সত্যজিৎ রায়ের পুত্র সন্দীপ রায় ও রে সোসাইটির অনুমতিপত্র জমা দেয় প্রকাশনা সংস্থা হার্পার কলিন্স। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘নায়ক’ অবলম্বনে উপন্যাস প্রকাশের আগে চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের আইনি স্বত্বাধিকারী পরিবারের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। প্রকাশনা সংস্থা দাবি করে, এক্ষেত্রে বানশাল পরিবারের অনুমতি প্রয়োজনীয় নয়। গত মে মাসে সেই মামলাতেই রায় দেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি সি হরি শঙ্কর। সত্যজিৎ রায়ই ‘নায়ক’-এর স্বত্বাধিকারী, এই মর্মে রায় প্রদান করে আদালত।
দিল্লি আদালত জানায়, ‘নায়ক’ ছবির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছিলেন সত্যজিৎ রায় নিজে। সেই সৃজনশীল কাজে প্রযোজনা সংস্থার কোনো অবদান ছিল না। তাই চিত্রনাট্যের স্বত্বাধিকারী সত্যজিৎই। তার অবর্তমানে সেই অধিকার রয়েছে তার পুত্র ও পরিচালক সন্দীপ রায় এবং রে সোসাইটির কাছে। তাই ছবি নিয়ে কোনো তৃতীয় পক্ষ কাজ করলে তাদের অনুমতিই যথেষ্ট। দিল্লি হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের এই রায়ের মাস তিনেক পরে সহমত প্রকাশ করল ডিভিশন বেঞ্চ।
কেএইচটি