‘বেদের মেয়ে জোসনা’র আয় নিয়ে মিথ্যাচার হচ্ছে
বাংলাদেশি চলচ্চিত্র ইতিহাসে সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল সিনেমার তালিকায় শীর্ষে আছে তোজাম্মেল হক বকুল পরিচালিত ‘বেদের মেয়ে জোসনা’। সিনেমাটি ওই সময় প্রায় ২০ কোটি টাকা আয় করে। তৎকালীন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও নির্মাতাদের কথায় এমনটাই প্রকাশ পায়।
কিন্তু ছবিটি মুক্তির তিন দশক পর এসে শুনতে হচ্ছে ভিন্ন তথ্য। সম্প্রতি জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার আবদুল আজিজ তার এক বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র পরে কোনো ছবিই ৫ কোটি টাকার বেশি পায়নি। ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ সম্পর্কে আজকে জেনে রাখেন, ছবিটির প্রযোজকের শেয়ার (আয়) ছিল ৭ কোটি টাকা। আব্বাস ভাই (আব্বাস উল্লাহ) ও পিনু ভাই (মতিউর রহমান পিনু) প্রত্যেকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা করে পেয়েছে। এটা পিনু ভাই নিজ মুখে আমাকে বলে গেছে।”
এছাড়া মাসখানেক আগে গেল ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘প্রিয়তমা’ ছবির নির্মাতা হিমেল আশরাফ দাবি করেন, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’কে ছাড়িয়ে যাবে ‘প্রিয়তমা’। দীর্ঘ ৩৪ বছর পর আবারও আলোচনায় ওঠে আসে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ ছবির আয় প্রসঙ্গ। যেহেতু এই ছবির নির্মাতা ও প্রযোজক দুজনেই মারা গেছেন, তাই এ ব্যাপারে জানতে সংবাদমাধ্যমের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় সিনেমাটির চিত্রনাট্যকার আলী আজাদের সঙ্গে।
তিনি বলেন, “বেদের মেয়ে জোসনা’ প্রায় ২০ কোটি টাকা আয় করেছিল। এটাই সত্য। সেসময় প্রযোজকরা এখনকার নির্মাতা ও প্রযোজকদের মতো কত লাভ হয়েছে, তা নিয়ে নিজেদের ঢোল পেটাতো না। তখন প্রযোজকরা যা লাভ হতো তার থেকে কম বলত। এখন যারা ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ সিনেমার আয় নিয়ে কথা বলছেন তারা আসলে নিজেদের আলোচনায় রাখতেই এসব বলছেন। তাদের সিনেমার প্রচারণার জন্য এসব করছেন।”
তিনি আরও বলেন, “একটা সহজ হিসাব করলেই হয়। তখন সিনেমা হল ছিল প্রায় ১২০০। এমন কোনো হল ছিল না যেখানে এই সিনেমা দু-তিন মাস চলেনি। আর এখন হল আছে কয়টা? সবগুলো হলে তিন মাস চললেও তার সমান আয় হবে না। ‘বেদের মেয়ে জোসনা আমায় কথা দিয়েছে’—এই গান কেউ শোনেননি বা ছবিটি কেউ দেখেননি এমন কোনো দর্শক খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাস সৃষ্টিকারী ছবি এটি।”
এ চিত্রনাট্যকারের মতে, এখন যারা নতুন করে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’র আয় নিয়ে কথা বলছেন তারা মূলত আলোচনায় থাকতেই এসব মিথ্যাচার করছেন।
প্রসঙ্গত, ১৯৮৯ সালের ৯ জুন মুক্তি পায় ‘বেদের মেয়ে জোসনা’। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেন অঞ্জু ঘোষ এবং তার বিপরীতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেন ইলিয়াস কাঞ্চন। সিনেমাটির ব্যাপক সফলতার ধারাবাহিকতায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও পুননির্মাণ করে মুক্তি দেওয়া হয়। মূল ভূমিকায় অভিনয় করেন অঞ্জু ঘোষ এবং চিরঞ্জিত চক্রবর্তী।
কেএইচটি