মিশা সওদাগরের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন অনন্ত জলিল
সম্প্রতি চিত্রনায়ক অনন্ত জলিলের ‘দিন: দ্য ডে’ দিয়ে সিনেমা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় খলনায়ক মিশা সওদাগর। তিনি বলেছিলেন, ‘দিন: দ্য ডে’ সিনেমা দিয়ে ইন্ডাস্ট্রির কোনো লাভ নেই। অনন্তের এই সিনেমায় ‘প্রফেশনাল কোনো শিল্পী নেই’ বলেও মত দিয়েছেন এই খল অভিনেতা।
সমালোচনার জবাবে এবার মিশা সওদাগরকে এক হাত নিলেন অনন্ত জলিল। তার দাবি, মিশাকে দিয়ে ‘ইন্ডাস্ট্রির কোনো লাভ নেই’। এছাড়া এই অভিনেতাকে ‘দিন: দ্য ডে’র মতো একটা সিনেমা বানিয়ে দেখানোরও চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন অনন্ত।
শনিবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি মাল্টিপ্লেক্সে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন চিত্রনায়ক-ব্যবসায়ী অনন্ত জলিল।
মিশার ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের অনন্ত জলিল বলেন, ‘মিশা সওদাগর সাহেব একজন পুরনো শিল্পী, তিনি যেটা ভেবেছেন সেটা বলেছেন। ইন্ডাস্ট্রির তো উনার দ্বারা কোনো উপকার হয়নি। উনি একজন প্রযোজকও না, ক্রিয়েটিভ পার্সনও না; উনি একজন শিল্পী। তার দ্বারা তো আর সিনেমার উন্নতি হয় না।’
মিশা সওদাগর যখন শিল্পী সমিতির সভাপতি ছিলেন তখন প্রায় দুই শতাধিক শিল্পীর ভোটাধিকার বাতিল করা হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে অনন্ত বলেন, ‘ভোটের জন্য তারা ২০০ জনের বেশি চলচ্চিত্রযোদ্ধা শিল্পীদের বঞ্চিত করেছিল। নিউজে সবসময় জায়েদ খানের নাম বলতে দেখেছি, মিশার নাম কম এসেছে। কিন্তু মিশা তো সভাপতি ছিলেন, শিল্পীদের বাদ দেওয়ার সই তো তিনিই করেছেন। চলচ্চিত্রের যোদ্ধাদেরকে এফডিসি থেকে বের করে দেওয়া হলো, পরে ইলিয়াস কাঞ্চন ভাই তাদের ফিরিয়ে আনলেন। তাহলে মিশার দ্বারা চলচ্চিত্রের উন্নয়ন কীভাবে হলো?’
অনন্ত বলেন, ‘আজকে সিনেমা যে ডিজিটালাইজড হয়েছে, এটা কার দ্বারা হয়েছে? অনন্ত জলিলের দ্বারা। যার কোনো ধরনের বিনিয়োগ নাই, যার নতুন ক্রিয়েটিভ নাই, চলচ্চিত্রের শিল্পীদের পর্যন্ত এফডিসি থেকে বের করে দিয়েছেন, কীভাবে তার দ্বারা চলচ্চিত্রের উন্নতি হয়?’
এই অভিনেতা দাবি করেন, ‘‘মিশা সওদাগরের প্যানেল থেকে শিল্পী সমিতির ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন এমন তিনজন শিল্পী আমাকে কল করে জানিয়েছেন, তাদেরকে মিশা বলেছেন, ‘অনন্ত ভাইয়ের বিরুদ্ধে আমার কথা বলার একমাত্র কারণ উনি যাতে রাগ হয়ে শিল্পী সমিতিতে কোনো তহবিল না দেন।’ আমি তো রাগী মানুষ, সেজন্য আমাকে রাগাতে মিশা এসব বক্তব্য দিয়েছেন।’’
‘মোস্ট ওয়েলকাম’খ্যাত এই নায়ক বলেন, ‘মিশা সওদাগর যেসব কথা বলেছেন, তা আপত্তিকর; এগুলো তার মুখে মানায় না। তার এতটুকু যোগ্যতা নাই এসব কথা বলতে পারেন। তার যোগ্যতা কী? শুধুমাত্র খল অভিনেতার চরিত্রে অভিনয় করে গেছেন। কোনো বিনিয়োগ করেননি। চলচ্চিত্রের জন্য ভালো কিছু করেননি। চলচ্চিত্রের যোদ্ধাদের বের করে দিয়েছেন। আমরা ৮ বছর না থেকেও এফডিসির সব অনুষ্ঠানে গিয়েছি, অর্থ দিয়ে পাশে থেকেছি। শিল্পীদের পাশে দাঁড়িয়েছি অর্থ-চিকিৎসা দিয়ে। উনি কী করেছেন?’
‘মিশা সাহেবের যদি এতোই যোগ্যতা থাকত, তাহলে ‘দিন: দ্য ডে’র মতো একটা সিনেমা বানিয়ে দেখাতেন। উনি তো আমেরিকা থাকেন, বাংলাদেশ থেকে টাকা-পয়সা নিয়ে যে বাড়ি-গাড়ি করছেন শুধু সেটাই না। আমেরিকার ছবি দেখেন, তাকে বলল, সেখানকার সিনেমার সঙ্গে ‘দিন: দ্য ডে’র তুলনা করে দেখেন।’
অনন্তের স্ত্রী চিত্রনায়িকা বর্ষাও সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দিন: দ্য ডে’তে মিশা সওদাগর নিজেও অভিনয় করেছেন। সিনেমাটি তার সন্তানের মতো, তিনি এই সিনেমা নিয়ে কীভাবে এমন মন্তব্য করলেন? ‘নেত্রী: দ্য লিডার’ সিনেমায় তাকে নেওয়া হয়নি, সে ক্ষোভেই তিনি এসব বলেছেন।’
আরআইজে