তাশরীফকে পুলিশের ধমক, যা বললেন গায়ক
বন্যাদুর্গত সিলেট-সুনামগঞ্জের মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে এসে দেশ তথা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশিদের নজর কেড়েছেন তরুণ সংগীতশিল্পী তাশরীফ খান। গত ১৩ জুন থেকে সিলেটের বানভাসি মানুষদের সহায়তা করে যাচ্ছেন ‘কুড়েঘর’ ব্যান্ডের এই গায়ক। ফেসবুক লাইভে আহ্বান জানিয়ে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় ১ কোটি তুলেছেন তিনি। সেই টাকা দিয়ে খাবার ও অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিচ্ছেন বানভাসিদের হাতে। তার এই উদ্যোগ কুড়িয়েছে ব্যাপক প্রশংসা।
কিন্তু সিলেটের একটি জায়গায় চা খেতে গিয়ে সেই তাশরীফই কিনা পুলিশের দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন। খেয়েছেন ধমকও। বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) ফেসবুক লাইভে এসে সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন তরুণ এই গায়ক। যার একটি ক্লিপও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
যেখানে তাশরীফকে বলতে শোনা যায়, ‘আমি একটা ইন্সিডেন্টের কথা শেয়ার করি। এটা আমার মনের ভেতর থেকে যাইতেছে না। মারাত্মক রকম একটা ব্যাড বাজ খেয়েছি আমি। সারাদিন কাজ করার পর গতকাল আড়াইটার দিকে সিলেটের একটি জায়গায় আমরা লাল চা খাচ্ছিলাম। এরপর পুলিশের একটা গাড়ি আসলো। পুলিশের একজন অফিসার মোটামুটি ধমকের স্বরেই বললেন, আপনারা কোথাকার? এখানে কী করতেছেন? আমি বললাম, স্যার আমরা এখানে ত্রাণ দিতে এসেছি ঢাকা থেকে। আপনাদের সিলেটের জন্যই কাজ করতেছি। আমরা চা খেয়ে এখান থেকে চলে যাবো। এরপর আমাকে সরাসরি ধমক দেওয়া হয়েছে। আমাকে বলা হয়েছে চলে যান এখান থেকে।’
এই গায়ক আরও যোগ করেন, “এরপর আমি তাকে বলেছি, স্যার দয়া করে কোনো নাগরিককে এভাবে ধমক দেবেন না। সিলেট বিপদে আছে। আমরা সিলেটের জন্য কাজ করতে আসছি। আমরা এখানে চুরি-চামারি করতে আসিনি। আমি উনাকে রিকুয়েস্ট করে বলেছি স্যার চায়ের কাপটা শেষ করে আমি চলে যাবো। তারপর আমাকে কী বলা হয়েছে শোনেন-তখন আমাকে আঙুল তুলে বলা হয়েছে, ‘এখন তো ভালো করে বলেছি এরপর খারাপ করে বলব। এক্ষুন্নি চলে যান এখান থেকে।’ এই কথাটা শোনার পর আমি একটা শব্দও করি নাই।”
লাইভে সেই পুলিশ সদস্যের উদ্দেশে তাশরীফ বলেন, ‘স্যার দয়া করে এই সময়টাতে আপনারা একটু পাশে দাঁড়াইয়েন। আমাদেরকে পারলে একটু সাহস দিয়েন। আমাদের সাহসটা খুব দরকার। আপনারা সাথে থাকলে আমাদের মন, আমাদের কাঁধটা অনেক ভারী হয়ে যায়।’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) ফেসবুক পেজে নিজের সবশেষ পোস্ট তাশরীফ বলেছেন, ‘ইতিমধ্যে আমারা প্রায় দেড় কোটি টাকা সংগ্রহ করেছি। যা দিয়ে সামনের কয়দিনে ৫টি উপজেলার প্রত্যেকটি গ্রামে প্রায় ১২০০০ হাজার পরিবারের কাছে ১২ থেকে ১৫ দিনের খাবার পৌঁছে দেব। আপনাদের পরবর্তী সাহায্যের উপর নির্ভর করবে আমরা বন্যায় আক্রান্ত অন্য জেলায় কাজ করতে পারব কি না! যতদিন মানুষের ঘরে পানি আছে ততদিন আমরা মাঠে থাকব এটা আমার ওয়াদা।’
আরআইজে