তার প্রতিটি চরিত্রই ছিল আলাদা বৈশিষ্ট্যের: হানিফ সংকেত
শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে সূত্রাপুরের নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশ বরেণ্য অভিনেতা, লেখক, প্রযোজক ও পরিচালক এটিএম শামসুজ্জামান। বড় ও ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশের নন্দিত উপস্থাপক ‘ইত্যাদি’ খ্যাত হানিফ সংকেত। শনিবার (২০) দুপুরে নিজের ফেসবুকে পেজে প্রয়াত এই অভিনেতাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন তিনি।
হানিফ সংকেত লেখেন, ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে ঝরে গেল আরও একটি নক্ষত্র। সকলের প্রিয় অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। আমাদের এটিএম ভাই। বর্ণাঢ্য যার অভিনয় জীবন। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন। অবশেষে আজ সকালে সূত্রাপুরে তার নিজস্ব বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। অত্যন্ত মেধাবী, প্রাণবন্ত, বিনয়ী, সহজ-সরল, সাদামাটা মানুষ ছিলেন এটিএম ভাই। ছিলেন একজন আদর্শ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব।’
এটিএম শামসুজ্জামের খোঁজ-খবর নেওয়ার কথা উল্লেখ করে হানিফ সংকেত লেখেন, ‘অসুস্থতার সময় নিয়মিত তার খোঁজ-খবর রাখতে চেষ্টা করতাম। হাসপাতালেও গিয়েছি। রুনী ভাবীর সঙ্গে নিয়মিত কথা হতো। এটিএম ভাই ছিলেন ইত্যাদির বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোর প্রায় নিয়মিত শিল্পী। এছাড়াও আমার অন্যান্য অনুষ্ঠান ও অনেকগুলো নাটকে তাকে নেওয়ার সুযোগ হয়েছিল। তাই কাছ থেকে দেখেছি, গভীরভাবে মেশার সুযোগ পেয়েছি। ছিল আন্তরিক সম্পর্ক। ইত্যাদির প্রতি তার একটা বিশেষ দুর্বলতাও ছিল। আর সেজন্যই চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায়ও তিনি বারবার ইত্যাদির কথা স্মরণ করেছেন।’
নন্দিত এই উপস্থাপক উল্লেখ করেন, ‘হাসপাতালে দেখতে গেলে সুস্থ হয়ে আবারও ইত্যাদির ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন। আর তাই প্রথম যখন কিছুটা সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন তখনই ভাবী আমাকে জানিয়েছিলেন এটিএম ভাই ইত্যাদিতে অভিনয় করতে চান। যেহেতু আমরা আমাদের নিজস্ব শুটিং স্পটে শুটিং করি এবং এখানকার পরিবেশ, খাওয়া-দাওয়া সবকিছুতে তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তাই তার বিশ্বাস এখানে এসে অভিনয় করলে তার শারীরিক কোন অসুবিধা হবে না। তাই এখান থেকেই তিনি আবার যাত্রা শুরু করতে চান।’
হানিফ সংকেত আরও তুলে ধরেন, ‘আরেকজন বর্ষীয়ান অভিনেতা জনাব মাসুদ আলী খানের সঙ্গে জুটি করে সেসময় ইত্যাদির জন্য ছোট্ট একটি নাট্যাংশ নির্মাণ করেছিলাম। যেটি পরবর্তীতে ইত্যাদিতে প্রচারিত হয়। আর ইত্যাদিতে করা সেই অভিনয়টুকুই ছিল এটিএম ভাইয়ের জীবনের শেষ অভিনয়। অনেক শিল্পীরই বিকল্প তৈরি হয় কিংবা করা যায় কিন্তু এটিএম শামসুজ্জামানের কখনোই কোনো বিকল্প ছিল না, আর তৈরি হবে কিনা জানি না। তার প্রতিটি চরিত্রই ছিল তার অভিনয় নৈপুণ্যে আলাদা বৈশিষ্ট্যের। এই মহান শিল্পীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা তার মাগফিরাত কামনা করছি।’
আরআইজে