কেকে’র মৃত্যুতে তসলিমার উপলব্ধি, ‘এক সেকেন্ডের নাই ভরসা’
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ তথা কেকে’র মৃত্যুতে গোটা ভারত তোলপাড়। কনসার্টে গাইতে গাইতে অসুস্থ হয়ে পড়া এবং মুহূর্তের মধ্যে তার মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না ভক্ত, শুভকাঙ্খীরা।
এদিকে কেকে’র এমন মৃত্যুকে ইতিবাচকভাবে দেখছেন আলোচিত-সমালোচিত লেখক তসলিমা নাসরিন। তার মতে, ‘জিনে রোগ শোক থাকে, ওটার আরেক নাম হয়ত নিয়তি। ওটাকে খুব একটা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা যায় না। আমার মনে হয় দীর্ঘদিন শারীরিক কষ্ট যন্ত্রণায় ভুগে মরার চেয়ে এমন হঠাৎ করে মরে যাওয়া অনেক ভালো। কেকের অনুষ্ঠানে প্রচুর শ্রোতা এসেছিল, প্রচুর সমর্থন তিনি পেয়েছেন, প্রচুর ভালোবাসা পেয়েছেন। মন তখন নিশ্চয়ই তার ভালো লাগায় ভরে ছিল। আনন্দে নেচেছিল হৃদয়। এই সুখানুভূতি নিয়ে যদি মৃত্যু হয়, তবে সেই মৃত্যু সওয়া যায়। কেউ ভালোবাসে না, কেউ কাছে আসে না, কেউ নেই কোথাও, শুধু দুঃখ, শুধু বেদনা, শুধু হতাশা-এমন সময় মৃত্যু এলে সেই মৃত্যু সওয়া যায় না।’
কেকে’র মৃত্যুতে জীবনের একটি গভীর সত্য উপলব্ধি করেছেন তসলিমা নাসরিন। সেটা হলো- এক সেকেন্ডের নাই ভরসা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তসলিমা লিখেছেন, “বাংলাদেশের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী ফিরোজ সাঁই ১৯৯৫ সালে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ‘এক সেকেন্ডের নাই ভরসা’ গানটি গাইতে গাইতে মঞ্চের ওপর ঢলে পড়েন। কী হয়েছিল? স্ট্রোক। স্ট্রোক থেকে মৃত্যু। সত্যিই তো, এক সেকেন্ডের নাই ভরসা।’
স্ট্যাটাসে তসলিমা আরও লিখেছেন, “গতকাল (৩১ মে) কলকাতার নজরুল মঞ্চে গান গাইতে গাইতে ঠিক নয়, তবে গানের অনুষ্ঠান থেকে হোটেলে পৌঁছেই সংগীতশিল্পী কেকে’র মৃত্যু হলো। মালায়ালি শিল্পী এদাভা বশিরও তিন দিন আগে গান গাইতে গাইতে মঞ্চের ওপরই মৃত্যুবরণ করেন। পৃথিবীর প্রচুর অভিনেতা, শিল্পী, বাদক মঞ্চে পারফর্ম করতে করতে মারা গেছেন। আসল সত্যটা হলো, এক সেকেন্ডের নাই ভরসা।”
নিজের উপলব্ধি থেকে তসলিমা আরও লিখেছেন, “কেকে’র বয়স এমন কিছু নয়, দেখলে মনে হয় রেগুলার ওয়ার্কআউট করা শরীর। স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন, হলে কী হবে, ওই যে ফিরোজ সাঁই গেয়েছিলেন, এক সেকেন্ডের নাই ভরসা। কেউ চমৎকার লাইফ স্টাইল মেইন্টেইন করেও হুট করে চলে যান, কেউ আবার কিছুই না করে ৯৯ বছর বেঁচে থাকেন।”
কেআই/আরআইজে