এটা হত্যা, আমি এর বিচার চাই: উজ্জ্বল
‘জারা সা’, ‘দিল ইবাদত’, তুহে মেরি সব হে’ ‘আঁখো মে তেরি’, ‘তু যো মিলা’, ‘জিন্দেগি দো পাল কি’, ‘মুঝকো পেহচানলো’, ‘তুনে মারি এন্ট্রিয়া’, ‘পিয়া আয়ে না’সহ আরও অনেক জনপ্রিয় গানের মাধ্যমে কোটি ভক্তের মনে জায়গা করে নিয়েছেন বলিউডের গায়ক কৃষ্ণকুমার কুন্নাথ তথা কেকে। মঙ্গলবার (৩১ মে) রাতে কলকাতার নজরুর মঞ্চে গান করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অনুষ্ঠানের চলাকালীন স্পট লাইট বন্ধ করতে বলেছিলেন। অনুষ্ঠান-বিরতিতে ব্যাক স্টেজে বিশ্রামও নেন। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হয়নি। চিরতরে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তুমুল জনপ্রিয় এই গায়ক।
কেকে'র এই মৃত্যু নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে চলছে তোলপাড়। এইরমধ্যে এটাকে অস্বাভাবিক মৃত্যু বলে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অনেকেই কেকের এই মৃত্যুকে দেখছেন হত্যা হিসেবে। বাংলাদেশের নন্দিত নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বলও এই গায়কের মৃত্যুকে হত্যা হিসেবে দেখছেন! দাবি করেছেন এই হত্যার বিচারও।
বুধবার (১ জুন) উজ্জ্বল তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘সারারাত ধরে কলকাতার নজরুল মঞ্চে কেকে’র কনসার্টের ছোট ছোট ক্লিপ আর সেখানে উপস্থিত কয়েকজনের লেখা থেকে যা বুঝলাম, তাকে জাস্ট মেরে ফেলা হয়েছে। কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণ দর্শক প্রবেশ করায় আয়েজকরা। সেটাকে থামাতে না পেরে নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষ তাদের সব এসি বন্ধ করে দেয়। কেকে বারবার জানান, তার এই গরমে গাইতে কষ্ট হচ্ছ, গানের ফাঁকে বারবার তোয়ালে দিয়ে ঘাম মুছছিলেন! একটা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটোরিয়ামে হাজার কিলো লাইটের মাঝে এসি ছাড়া কী করে টিকে থাকা সম্ভব, তারপর আবার গান করে যাওয়া।’
এই নির্মাতার ভাষ্যে, ‘ভিড় ঠেকাতে এসি বন্ধ রাখার সময় নজরুল মঞ্চ কর্তৃপক্ষের একবারও কি মনে হয়নি মানুষটা এই গুমোট আর গরমে দমটা নেবেন কী করে! গাইবেন বা কী করে! শিল্পীর প্রতি পৃথিবী বরাবরই নির্দয়, শিল্পীকে সম্পূর্ণ নিংড়ে নিয়ে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়াই পৃথিবীর কাজ।’
‘উনপঞ্চাশ বাতাস’ খ্যাত এই নির্মাতার মতে, ‘‘কেকে’র মতো এমন অসামান্য জনপ্রিয় একজন শিল্পী দীর্ঘদিন মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অবহেলিত ছিলেন। খুব একটা কাজ পাচ্ছিলেন না, অথচ তার হিট গানের কোনও কমতি ছিল না! শিল্পীর একমাত্র লোভ পারফর্ম করে যাওয়া। আমার খালি বারবার মনে হচ্ছে দীর্ঘদিন পর এত বিগ ক্রাউডের সামনে তার নিশ্চয়ই গাইতে খুব ভালো লাগছিল। তাই তিনি এই গরম আর গুমোটকে উপেক্ষা করে হাসিমুখে গাইছিলেন। অথচ তিনি জানতেনই না এরা তাকে স্রেফ নিংড়ে নিয়ে শেষ করে দিতে এসেছে! আমি এটাকে নিছক স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মানতে চাই না, এটা হত্যা! একজন মানুষ একজন শিল্পী হিসাবে আমি এই হত্যার বিচার চাই।’’
আরআইজে