ভালো লাগছে, আবার দুশ্চিন্তাও হচ্ছে
ছেলে গেট দিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করছে, আর মা পেছন থেকে তাকিয়ে দেখছেন। ছেলে প্রবেশের পরও মা গেটের বাইরে কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকলেন। এরপর হাঁটা দিলেন।
মায়ের নাম তাহমিনা আক্তার। তার ছেলে মাইলস্টোন প্রিপারেটরি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। এ অভিভাবক বলেন, তবে স্কুলে আসতে পেরে ছেলে খুব খুশি। আমারও ভালো লাগছে। অনলাইনে পড়াশোনায় খুব বেশি আগ্রহ ছিল না। ফলে আমরাও স্কুল খোলার অপেক্ষায় ছিলাম।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ তো এখনো আছে। ক্লাসে ঠিকমতো সবকিছু মেইনটেইন হবে কি না, তা নিয়েই দুশ্চিন্তা হচ্ছে। একদিকে ভালো লাগছে, অন্যদিকে দুশ্চিন্তাও হচ্ছে।
শুধু তাহমিনা আক্তারই নন, তার মতো অধিকাংশ অভিভাবকের চোখে-মুখেই এমন মিশ্র ছাপ দেখা যাচ্ছে। একদিকে স্কুল খোলায়, সন্তান স্কুলে যাওয়ায় অভিভাবকরা খুশি। তবে করোনার সংক্রমণ রয়েছে যাওয়ায় তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তাও কাজ করছে।
রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়ে দেখা গেল, শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ব্যস্ত সময় পার করছে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অভ্যস্ত করতে আন্তরিকতার সঙ্গে কথা বলছেন। অধিকাংশ সময়ই তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করছেন, পড়াশোনার খবর নিচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের কোলাহলে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। চার শিফটে সম্পূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান পরিচালনা করা হচ্ছে উল্লেখ করে রাজউক উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল দেওয়ান মোহাম্মদ তমিজউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছি।
তিনি বলেন, সরকারের সব ধরনের নির্দেশনা মেনে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। অতীতে অনলাইনে পাঠদান কার্যক্রম ছিল। আজ থেকে শুরু হলো সশরীরে। শিক্ষার্থীরা এতে খুব বেশি উপকৃত হবে। অনেকদিন পর বিদ্যালয়টি প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে।
দ্বিতীয় শিফটে ক্লাসে প্রবেশের জন্যে অপেক্ষা করছে এসএসসি পরীক্ষার্থী রোরহান। কেমন লাগছে- জানতে চাইলেই হাসিমুখে সে বলল, খুব ভালো লাগছে। অনেকদিন পর সবার সঙ্গে দেখা হবে। পড়াশোনা নিয়ে সরাসরি কথা বলব।
এ প্রতিষ্ঠানে আসা হাবিবুল্লাহ নামে এক অভিভাবক বলেন, স্কুলে আসার জন্যে আমার মেয়ে তো ভোর থেকে রেডি। এমনও বলেছিল যে, স্কুলে নিয়ে না এলে সে পালিয়েই চলে আসবে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপে গত বছরে ১৭ মার্চ সরকার দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত একাধিকবার শ্রেণি কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু সংক্রমণের দাপটে তা আর হয়ে ওঠেনি। অবশেষে আজ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুলেছে।
একে/আরএইচ