উচ্চশিক্ষায় সশরীর ও অনলাইন শিক্ষার সুযোগ রেখে খসড়া চূড়ান্ত
উচ্চশিক্ষায় সশরীর ও অনলাইন শিক্ষা সমন্বিত করে ব্লেন্ডেড লার্নিং নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন পিছিয়ে না পড়ে সে বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে খসড়া নীতিমালায়।
‘ব্লেন্ডেড লার্নিং ফর বাংলাদেশ’ শিরোনামে চূড়ান্ত খসড়া নীতিমালাটি সরকারের অনুমোদনের জন্য শিগগিরই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। অনলাইন ও অনসাইট এডুকেশন পদ্ধতিকে একত্রিত করে উচ্চশিক্ষায় যুগোপযোগী শিখন-শিক্ষণ পদ্ধতির নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটির এক ভার্চুয়াল সভায় বুধবার (২৫ আগস্ট) ব্লেন্ডেড লার্নিং নীতিমালার খসড়াটি চূড়ান্ত করা হয়।
ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দের সভাপতিত্বে সভায় কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. দিল আফরোজা বেগম, প্রফেসর ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, বাংলাদেশ অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য প্রফেসর ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির প্রফেসর ড. কাজী মোহাইমিন আস-সাকিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. খাদেমুল ইসলাম, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. আ. ফ. ম. সাইফুল আমিন, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের প্রফেসর ড. মো. মোজ্জাম্মেল হক আজাদ খান, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. সাদেকুল ইসলাম ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন প্রফেসর ড. আরশাদ মাহমুদ চৌধুরী যুক্ত ছিলেন।
কমিশনের স্ট্রাটেজিক প্লানিং অ্যান্ড কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স বিভাগের পরিচালক ড. ফখরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো. ওমর ফারুখ, আইএমসিটি বিভাগের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়া ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যুক্ত ছিলেন।
খসড়া ব্লেন্ডেড লার্নিং নীতিমালায় সশরীর ও ভার্চুয়াল মাধ্যমে পাঠদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। কোনো শিক্ষার্থী সশরীর পাঠদানের সুযোগ বঞ্চিত হলে রেকর্ডেড ক্লাস থেকে লেখাপড়ার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারবে। কার্যকর প্রতিকারমূলক শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য পর্যাপ্ত মাল্টিমিডিয়া কনটেন্টের সুযোগ থাকবে।
প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, এই নীতিমালা চূড়ান্ত হলে ক্লাসরুম শিক্ষা অধিক অংশগ্রহণমূলক হবে। শিক্ষার্থীরা কার্যকরভাবে শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এটি শিখন-শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। শ্রেণিকক্ষে বিভিন্ন ধরনের রিসোর্স ব্যবহারের ফলে শিক্ষার্থীরা পাঠদানে আনন্দ পাবে। অংশগ্রহণমূলক শিক্ষণ প্রক্রিয়ায় তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। ব্লেন্ডেড লার্নিং পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার রোধ করবে এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে তাদের চাকরি উপযোগী করে গড়ে তুলবে।
তিনি আরও বলেন, মুজিব বর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে ব্লেন্ডেড লার্নিং নীতিমালা প্রণয়ন দেশের জন্য এটি মাইলফলক এবং এটি উচ্চশিক্ষার জন্যও একটি বড় অর্জন। ব্লেন্ডেড লার্নিং চালু থাকলে ভবিষ্যতে যে কোনো বিপর্যয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান রাখা সম্ভব হবে।
এ সময় প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে ব্লেন্ডেড লার্নিং বাস্তবায়নে প্রস্তুতি গ্রহণ, সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিগত অবকাঠামো উন্নয়নের পরামর্শ দেন।
এনএম/এসকেডি