ঢাবি প্রশাসনের কুশপুতুল পোড়াল বাম জোট
স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে পরীক্ষা গ্রহণ, করোনাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতন-ফি না নেওয়া এবং টিএসসির বর্তমান অবকাঠামো না ভাঙার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে জোটের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতীকী কুশপুতুল পোড়ায় জোটের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন বাম ছাত্রসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
জোটের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সমন্বয়ক সোহাইল আহমেদ শুভর সভাপতিত্বে এবং সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের ঢাবি শাখার সহ-সভাপতি সাদেকুল ইসলাম সাদিকের সঞ্চালনায় কর্মসূচিতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- ছাত্র ইউনিয়নের ঢাবি শাখার সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ এবং ছাত্র ফন্টের ঢাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রগতি বর্মণ তমা। এ সময় সেখানে ছাত্র ফন্টের ঢাবি শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকীসহ জোটের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে জোট নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনার বিশেষ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের জোর করে নিয়ে এসে কোনো ধরনের আয়োজন ছাড়াই পরীক্ষায় বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীদের ওপর জুলুমের শামিল। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগে পরীক্ষা শুরু হয়ে গেছে, অনেক বিভাগে পরীক্ষার ঘোষণা দেওয়া আছে। ঢাকার বাইরে থাকা বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ঢাকায় এসে কোথায় থাকবেন, কী করবেন- তার কোনো নিশ্চয়তা না দিয়ে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তারা আরও বলেন, করোনা মহামারি অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করেছে। নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের আয় কমে যাওয়া ও চাকরি হারানোর পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষা-কার্যক্রম বন্ধ থাকা সত্ত্বেও এ বছরের বেতন-ফি নিচ্ছে প্রশাসন। বেঁধে দেওয়া সময়ে বেতন-ফি দিতে না পারায় অনেক শিক্ষার্থীকে জরিমানাও দিতে হচ্ছে। প্রশাসনের এসব অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্তের আমরা প্রতিবাদ জানাই।
তারা বলেন, টিএসসি ভবন কেবল ইট-পাথরের কোনো ভবন নয়। দেশের সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কেন্দ্র এই টিএসসি। সব মত ও পথের মানুষের মিলনকেন্দ্র এই টিএসসি। টিএসসি ভেঙে ২০ তলা ভবন বানিয়ে এর পরিসরকে সঙ্কুুচিত করার চক্রান্ত চলছে।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সংকট চলছে। হলে জায়গা নেই, শিক্ষার্থীরা ঘুমাতে পারেন না। তারা হলের বারান্দা, মসজিদ ও ক্যানটিনে ঘুমান। গ্রন্থাগারে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা নেই। এসবের সুরাহা না করে প্রশাসন ২০তলা ভবন নির্মাণের যে প্রকল্প নিচ্ছে, তার পুরোটাই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে। এখানে শিক্ষার্থীদের কোনো স্বার্থ নেই। ছাত্রসমাজ এই চক্রান্ত মেনে নেবে না বলে সমাবেশে বলা হয়।
এ সময় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংকট সমাধান করে অবিলম্বে ক্যাম্পাস খোলার রোডম্যাপ ঘোষণার দাবি জানান। বক্তারা জানান, তিন দাবিতে তারা গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি পরিচালনা করছেন। সমাবেশ থেকে আগামী ২৪ জানুয়ারি বেলা ১২টায় প্রগতিশীল ছাত্রজোটের ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়। এ সময় সেদিন সারাদেশে অবস্থানরত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ও অফলাইনে সম্মিলিতভাবে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আহ্বান জানান সংগঠনটির
নেতৃবৃন্দ।
এইচকে