নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা
কোভিড পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা এবং ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষা নিয়ে আয়োজিত ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী এ তথ্য জানান।
করোনা পরিস্থিতি যদি অনুকূলে না আসে এবং এ কারণে যদি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান নেহাল আহমেদসহ অন্যান্য বোর্ডের চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে চাই না বলে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছি। এজন্য বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার, অনলাইনে ক্লাস ও অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করা হচ্ছে। বিকল্প কার্যক্রমে যারা যুক্ত হতে পারেনি তাদের নিয়েও ভাবা হচ্ছে। এজন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত দেড় বছরের মধ্যে যাদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হতে পারেনি, তাদের জন্যও আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। কীভাবে এ ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এসএসসি পরীক্ষার ক্ষেত্রে বাংলা, ইংরেজি, গণিত, আইসিটি ও ধর্ম আবশ্যিক বিষয়ের মূল্যায়নে আগে দেওয়া জেএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর মূল্যায়ন করা হবে। ঐচ্ছিক বিষয়ের ওপর তৈরি করা সংক্ষিপ্ত সিলেবাস অনুযায়ী আগামী ১৮ জুলাই থেকে পরবর্তী ১২ সপ্তাহে ২৪টি অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে। প্রতি সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হবে।
অন্যদিকে এইচএসসি’র জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাসের ওপর ২৫ জুলাই থেকে ১৫ সপ্তাহে ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট করতে হবে। তাদেরও প্রতি সপ্তাহে দুটি করে পাঁচটি পত্রের ওপর ৩০টি অ্যাসাইনমেন্ট করে কলেজে জমা দিতে হবে। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ঐচ্ছিক বিষয়গুলোর সংক্ষিপ্ত আকারে পরীক্ষা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, যেহেতু শিক্ষার্থীরা আবশ্যিক বিষয় আগের স্তরে পড়ে এসেছেন। ঐচ্ছিক বিষয়গুলো তাদের পরবর্তী ক্লাসে প্রয়োজন হবে। এজন্য পরীক্ষার্থীদের শিখন জ্ঞান অর্জন করছে কি না তা নিশ্চিত করতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এজন্য সব শিক্ষার্থীকে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
এর আগে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে একাধিক প্রস্তাবনা তৈরি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এসব প্রস্তাবে বলা হয়েছে, রচনামূলক বা সৃজনশীল প্রশ্ন বাদ দিয়ে কেবল বহু নির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ) পরীক্ষা নেওয়া, বিষয় ও পূর্ণমান (পরীক্ষার মোট নম্বর) কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া, এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের দুই পত্র একীভূত করা। পাশাপাশি ২০০ নম্বরের বদলে ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাবও রয়েছে। কিন্তু উভয়ক্ষেত্রেই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। সংক্রমণের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়া, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কেন্দ্রের সংখ্যা বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করে এই পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে।
আর এমন সম্ভব না হলে এসএসসির ক্ষেত্রে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলের ৫০ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্ট ও ক্লাস অ্যাকটিভিটিসের ওপর ৫০ শতাংশ ফলাফল নিয়ে ফল প্রস্তুত করা। এইচএসসির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর এসএসসির ফলের ৫০ শতাংশ, জেএসসির ২৫ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্টের ফলের ২৫ শতাংশ সমন্বয় করে ফল প্রকাশের কথা প্রস্তাবে বলা হয়েছে।
এনএম/জেডএস/জেএস