বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা : চাকরি হারালেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান
কোটা সংস্কারের দাবিতে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের তীব্র আন্দোলন ও সংঘর্ষে ছয় জন নিহত হওয়ার পর হঠাৎ করে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এরপর শিক্ষার্থীরা হল ছাড়া হয় এবং সারা দেশে তাদের ওপর হামলা-নির্যাতন শুরু করে ছাত্রলীগ-পুলিশ। তৎকালীন সরকারকে খুশি করতে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেন ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আলমগীর। আজ তাকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
ইউজিসির একজন কর্মকর্তা জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে বাধা প্রদান ও অবৈধ উপায়ে নিয়োগ পাওয়ার অভিযোগে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) থেকে ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যানসহ ৫ শিক্ষক, ৬ কর্মকর্তা ও একজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন— মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মিহির রঞ্জন হালদার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. শিবেন্দ্র শেখর শিকদার, মেকানিক্যাল বিভাগের প্রফেসর ড. সোবহান মিয়া এবং কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর ড. পিন্টু চন্দ্র শীল।
বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) তাদের বহিষ্কার করে ইউজিসিকে অবগত করা হয়েছে। ইউজিসির একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুন
কর্মকর্তারা বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে চরম বিতর্ক জন্ম দেয় তৎকালীন প্রশাসন। কমিশনের এখতিয়ার না থাকার পরও ইউজিসি আগ বাড়িয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ ঘোষণা করে। এর নেপথ্যে ছিল ইউজিসির তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আলমগীর। নতুন সরকার আসার পর কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পদত্যাগ করে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শিক্ষকতায় ফিরে যান। এবার সেই চাকরিও হারালেন। যদিও তার এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করেন ইউজিসির তৎকালীন সচিব। তার ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি ইউজিসি।
তাদের বহিষ্কারের বিষয়টি কুয়েটের রেজিস্ট্রার মো. আনিসুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, বরখাস্ত শিক্ষক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে বাধা দেওয়া, বিভিন্ন সময়ে সাধারণ ছাত্র-শিক্ষক নির্যাতনে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত, সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল। এজন্য খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০০৩ এর ৪৪ (৫) ধারা ভঙ্গের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় গত ২১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪ তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এনএম/এমএ