শিক্ষা ক্যাডারে আসছে বড় পদোন্নতি
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের তিন স্তরে বড় পদোন্নতি আসছে। অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক ও সহকারী অধ্যাপক এই তিন ক্যাটাগরিতে বড় ধরনের পদোন্নতির কাজ শুরু করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথম ধাপে সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক, এরপর সহকারী থেকে সহযোগী অধ্যাপক, সর্বশেষ প্রভাষক থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে।
এরই অংশ হিসেবে বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অধ্যাপক পদোন্নতির জন্য ‘বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি’র (ডিপিসি) সভা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী শনিবার ফের সভা ডাকা হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বুধবার বৈঠকে ১৬ থেকে ২২তম বিসিএস পর্যন্ত সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য ১ হাজার ৬০ জনের বিপরীতে ১ হাজার ৯৪৯ জনের তালিকা উপস্থাপন করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। তালিকায় ২০২৫ সালে অবসরে যাবেন এমন কর্মকর্তাদের নাম সংযুক্ত করে এ তালিকা করা হয়েছে। তালিকায় দেশের বিভিন্ন কলেজে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ, প্রশাসনিক পদ ধরা হয়েছে। তবে কতজনকে শেষ পর্যন্ত পদোন্নতি দেওয়া হবে তা চূড়ান্ত হয়নি।
আরও পড়ুন
মাধ্যমিক ও উচ্চ অধিদপ্তরের কলেজ শাখার কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষা ক্যাডারের নিয়োগ হয় বিষয় ভিত্তিক। পদোন্নতিও দেওয়া হয় বিষয় ভিত্তিক। এবারও সেইভাবে পদোন্নতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। এরইমধ্যে মাউশি থেকে পদোন্নতিযোগ্য অধ্যাপক কর্মকর্তাদের তালিকা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকা অনুযায়ী বুধবার সহযোগী অধ্যাপক থেকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। আগামী শনিবার ফের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পদোন্নতি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। সর্বশেষ ২০২৩ সালে মার্চ মাসে ৬৮৬ জনকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
১৬তম থেকে ২২তম বিসিএস পর্যন্ত শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপক সবাইকে পদোন্নতির প্রস্তাব করেছে মাউশি। ২২তম ব্যাচ পর্যন্ত সবাইকে পদোন্নতি দিতে সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হবে না। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পেয়ে বর্তমানে পঞ্চম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন তারা। এই সংখ্যা প্রায় দুই হাজারের মতো।
কর্মকর্তারা বলছেন, অধ্যাপকের পর সহযোগী এবং সহকারী পদে পদোন্নতির কাজ শুরু হবে। চলতি বছরের মধ্যে এ তিন ক্যাটাগরিতে পদোন্নতি দেওয়ার কাজ শেষ করতে চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
জানতে চাইলে মাউশির মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) প্রফেসর ড. রেজাউল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকের ডিপিসি সভায় সবার সঙ্গে পরিচয় পর্ব ও প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। কতজনকে পদোন্নতি দেওয়া হবে তা চূড়ান্ত করতে আরও কয়েকটি সভা করতে হবে। আগামী শনিবার ফের সভা ডাকা হয়েছে। এর আগে কতজনকে পদোন্নতি দেওয়া হবে তা বলা যাচ্ছে না। আর্থিক সংশ্লেষ না থাকায় আমরা ১৬ থেকে ২২ ব্যাচ পর্যন্ত সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির প্রস্তাব করেছি।
জানা গেছে, পদোন্নতির সকল শর্ত পূরণ করেও বছরের পর বছর পদোন্নতি বঞ্চিত শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এর মধ্যে কোনো কোনো ব্যাচের কর্মকর্তারা দেড় যুগ ধরে একই পদে কর্মরত আছেন। দীর্ঘদিন একই পদে কর্মরত থাকায় শিক্ষা ক্যাডারের মূল পদ সরকারি কলেজের শিক্ষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। সামাজিকভাবেও বিব্রত হচ্ছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশির কর্মকর্তারা বলছেন, অন্য ক্যাডারে ব্যাচ ভিত্তিক পদোন্নতি দেওয়া হলেও শিক্ষা ক্যাডারে বিষয় ভিত্তিক পদোন্নতি দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, ১৬তম থেকে ২২তম বিসিএস পর্যন্ত শিক্ষা ক্যাডারের সহযোগী অধ্যাপক সবাইকে পদোন্নতির প্রস্তাব করেছে মাউশি। ২২তম ব্যাচ পর্যন্ত সবাইকে পদোন্নতি দিতে সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হবে না। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ অনুযায়ী প্রতি বছর পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট পেয়ে বর্তমানে পঞ্চম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন তারা। এই সংখ্যা প্রায় দুই হাজারের মতো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাউশি সূত্রে জানা গেছে, সংখ্যার দিক দিয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার বড় ক্যাডার। বর্তমানে এই ক্যাডারে মোট পদ আছে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজারের বেশি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ১৩ হাজারের কিছু বেশি কর্মকর্তা। এই ক্যাডারের অধিকাংশ কর্মকর্তা সরকারি কলেজে শিক্ষকতা করেন। আর কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা মাউশি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থাপনা একাডেমিসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কর্মরত।
এনএম/এমএসএ