একের পর এক ভুল, চট্টগ্রামে এবার ৯৬ মার্কের পরীক্ষা!
বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডকে। বোর্ডের অধীনে চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় কেন্দ্রে ভুল প্রশ্ন সরবরাহের পর এবার প্রশ্নেই বড় ভুল নিয়ে পরীক্ষার দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। হিসাববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নে ৪ নম্বর কম ছিল, অর্থাৎ ১০০ মার্কের জায়গায় ৯৬ মার্কের প্রশ্ন করা হয়েছে।
রোববার (১৪ জুলাই) চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চলমান এইচএসসি পরীক্ষার হিসাববিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে।
এনিয়ে চিন্তিত পরীক্ষার্থী ও তাদের স্বজনরা। তবে শিক্ষা বোর্ড সূত্র বলছে, প্রশ্নপত্রের ভুলে পরীক্ষার্থীরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে হিসাববিজ্ঞান দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্নে দেখা গেছে, এই বোর্ডে নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা হয়েছে। প্রশ্নপত্রের ৮ নম্বরের সৃজনশীল প্রশ্নের তৃতীয় অংশটি অর্থাৎ প্রয়োগ ও উচ্চতর দক্ষতা মূলক ‘গ’ প্রশ্নটি প্রশ্নপত্রে ছিল না। ওই প্রশ্নের পূর্ণমান ছিল ৪।
চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী মীর মোহাম্মদ মিশেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর দেখি ৮ নম্বরের গ অংশ নাই প্রশ্নে। এতে আমরা বিচলিত হয়ে পড়ি। পরে হলের স্যারকে জানালে তিনি কোনো সমস্যা হবে না বলে বাকি দুটি লিখতে বলেন। এখনও বুঝতে পারছি না কী হবে। এখানে তো আমাদের ভুল নেই।’
আরও পড়ুন
সরকারি হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন রানা বলেন, প্রশ্নপত্রে ভুলে আমাদের কোনো দোষ নেই। আমরা চাই বোর্ড কর্তৃপক্ষ যেন এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।
বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রশ্নপত্রের ভুলের বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডকে জানানো হবে। শিক্ষার্থীরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। তাদের দাবি, প্রশ্নপত্র প্রণয়নের পর মডারেটররা সেটি যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্ত করেন। মডারেটরের দায়িত্বে যারা ছিলেন তাদের ভুলে এমন ঘটনা ঘটেছে।
বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বোর্ডে অনুষ্ঠিত পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করে অন্য কোনো শিক্ষা বোর্ড। যদিও এবারের চলমান এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র কোন বোর্ড করেছে তা জানা যায়নি। প্রশ্নকারী প্রশ্ন জমা দেওয়ার পর অন্তত চারজনের বোর্ডে সেটি মডারেশন হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এ এম এম মুজিবুর রহমান জানান, ‘যদি প্রশ্নপত্রে কোনো কিছু মিসিং থাকে তাহলে এর জন্য পরীক্ষার্থীরা দায়ী নয়। তাই নিয়ম অনুযায়ী এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটলে পরীক্ষার্থীরা ওই প্রশ্নের পূর্ণমান নম্বর পাবে। এ ব্যাপারে আগে থেকেই পরীক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া থাকে, তাই প্রশ্নপত্রের ভুলে পরীক্ষার্থীরা কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।’
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের অংশবিশেষ মিসিং ছিল। আমরা জেনেছি। যেহেতু এই প্রশ্ন আমরা তৈরি করিনি, অন্য বোর্ড করেছে। সেটা আবার বিজি প্রেস ছেপেছে। সেটা নিয়ে আন্তঃশিক্ষাবোর্ড নিশ্চয়ই একটা পর্যালোচনা করবে। আমরা আন্তঃশিক্ষা বোর্ডকে এ বিষয় সম্পর্কে জানাবো।’
এর আগে ১১ জুলাই সকালে চট্টগ্রামের বিজয় সরণি কলেজ কেন্দ্রে পদার্থবিজ্ঞান প্রথম পত্রের পরীক্ষায় পদার্থবিজ্ঞান দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়। শিক্ষার্থীরা বিষয়টি পরীক্ষা পর্যবেক্ষকদের জানালে তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রথম পত্রের প্রশ্নপত্র এনে দুপুর ১২টা থেকে পুনরায় পরীক্ষা শুরু করা হয়।
ওইদিনই কেন্দ্র সচিব অধ্যক্ষ শিব সঙ্কর শীল ও পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ নোমানকে পরবর্তী পরীক্ষা কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
আরএমএন/এসএম