ভিকারুননিসায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের বাঁধভাঙা উল্লাস
২০২৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছেন রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাদের বাঁধভাঙা উল্লাসে শামিল হয়েছেন অভিভাবকরাও। স্কুলটিতে এবার পাসের হার ৯৮.৪৫ শতাংশ।
রোববার (১২ মে) রাজধানীর বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ঘুরে দেখা যায়, সকাল ১১টার পর থেকে স্কুল প্রাঙ্গণে বাড়তে থাকে ফলপ্রত্যাশী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উপস্থিতি। দুপুর ১২টার পর মাঠের অর্ধেক পূর্ণ হয়ে যায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকে। স্কুলের ভেতরের মাঠে বড় গাছতলায় ড্রাম বাজিয়ে উল্লাস করে শিক্ষার্থীরা। মানববৃত্ত তৈরি করে নেচে-গেয়ে বিজয়কে স্বাগত জানায় তারা। তাদের দেখে অনেকটা স্কুলের স্মৃতিতে ফিরে যান অভিভাবকরা। আনন্দে শামিল হন তাদের সঙ্গে। নেচে-গেয়ে উল্লাস করেন তারাও।
এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ লামিয়া জাহান রাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের এবার ফুল সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। গত বছর শর্ট সিলেবাসে হয়েছিল। এবার সময় একটু কম ছিল। তারপরও যারা সময়টা ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে তারা ভালো ফলাফল করেছে।
‘শেষের তিন মাস আমি অনেক এফোর্ট দিয়েছি, সেটার ফল আজ পেলাম। আলহামদুলিল্লাহ জিপিএ-৫ পেয়েছি। আমার মনে হয় পাস করার জন্য এত পড়াশোনা করতে হয় না। এক মাস ঠিক মতো এফোর্ট দিলেই এনাফ।’
আরও পড়ুন
জুনিয়রদের বলতে চাই, যারা এখন নাইনে উঠেছে, তাদের এখন থেকেই পড়া শুরু করা উচিত। বিশেষ করে সায়েন্সের পড়া অনেক। সেখানে সূত্র থেকে শুরু করে নানা চ্যাপ্টার রয়েছে। এগুলো শুরু থেকে না পড়লে শেষের দিকে এসে কোনোভাবেই কাভার করা যায় না— বলেন এ শিক্ষার্থী।
এ প্লাস পেয়ে উর্ত্তীর্ণ শিক্ষার্থী নাজাতাজ ইমতিয়ানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফুল সিলেবাসের কনসেপ্টটা আসলে ভালো। এটা হলে কোনো চ্যাপ্টার বাদ হওয়ার সুযোগ থাকে না। যারা ক্লাস নাইন থেকেই পড়াগুলো ঠিকঠাকভাবে পড়ে, তারা কখনও শর্ট সিলেবাস চাইবে না। ক্লাস নাইনে আমি কভার করতে পারিনি। সেখানে আমি বাংলাতে দুর্বল ছিলাম, কেমিস্ট্রিতে দুর্বল ছিলাম। এরপর ক্লাস টেনে উঠে পরীক্ষা পর্যন্ত আমি অনেক কষ্ট করেছি। আমার আম্মু অনেক সাপোর্ট দিয়েছেন। তা না হলে বোধ হয় আজ এখানে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারতাম না।
‘আমি জিপিএ ফাইভ পেয়েছি। মা-বাবাকে একটু প্রাউড করতে পেরেছি, আমার এতেই ভালো লাগছে। আলহামদুলিল্লাহ।’
অভিভাবক ফৌজিয়া রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মেয়ে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে। আমার খুবই ভালো লাগছে। মেয়ে আমার আশা পূরণ করতে পেরেছে, আলহামদুলিল্লাহ।
‘সংসার সামলানোর পর যতটুকু সময় পেয়েছি, পুরোটাই আমি আমার মেয়ের পেছনে ব্যয় করেছি। নিজের সময়টুকু দিয়ে ওর জন্য চেষ্টা করেছি যাতে ভালো রেজাল্ট করতে পারে, ভালো মানুষ হতে পারে। আল্লাহর কাছে অনেক শুকরিয়া, আল্লাহ আমার মনের আশা পূরণ করেছেন।’
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) কেকা রায় চৌধুরী বলেন, আমাদের স্কুল থেকে এবার তিনটি বিভাগ থেকে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল দুই হাজার ২০৬ জন। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল দুই হাজার ১৯৫ জন। এর মধ্যে পাস করেছে দুই হাজার ১৬১ জন। ফেল করেছে ৩৪ জন। মোট পাসের হার ৯৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ। জিপিএ ফাইভ পেয়েছে এক হাজার ৫২৮ জন। জিপিএ ফাইভ পাওয়ার হার ৭০ দশমিক ৭১ শতাংশ।
এমএইচএন/পিএইচ