ছাত্রীকে যৌন হয়রানি : সেই শিক্ষক অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত
বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না রাজধানীর স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের। এবার কোচিংয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে আজিমপুর শাখার গণিতের শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সরিয়ে আনা হয়েছে। শাস্তি হিসেবে তাকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ ফ্রেব্রুয়ারি) ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে মূল শাখায় সংযুক্ত করা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত কমিটি করা হয়। ওই কমিটি ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। তাই চূড়ান্ত শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত তিনি অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন।
জানা গেছে, প্রায় এক দশক ধরে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিশু শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট কোচিংয়ে নিয়ে যৌন নির্যাতন করতেন আজিমপুর শাখার গণিতের শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকার। এ ঘটনায় রাজধানীর স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটিতে তোলপাড় শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানি করার ঘটনায় অভিভাবকদের দেওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী। পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশের স্বার্থে কর্তৃপক্ষ যাতে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে, তার নিশ্চয়তা চান অভিভাবকরা।
আরও পড়ুন
জানা গেছে, যৌন হয়রানি ও নিপীড়নের বিচার চেয়ে গত ৭ ফেব্রুয়ারি মুরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর শাখার প্রধান সাবনাজ সোনিয়া কামালের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন কয়েকজন অভিভাবক। সেখানে তারা সন্তানদের সঙ্গে ঘটা যৌন হয়রানির ঘটনার বিবরণ দিয়ে অভিযুক্ত মুরাদের যথোপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন। সেই অভিযোগপত্র যায় ভিকারুননিসার অধ্যক্ষের কাছে। পরদিন অধ্যক্ষ তিন সদস্যের প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটির আহ্বায়ক আইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মমতাজ বেগম। সদস্য পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. ফারহানা খানম ও ইংরেজি প্রভাতী শাখার শাখাপ্রধান শামসুন আরা সুলতানা।
তবে কমিটি গঠনের পরপরই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা, ভুক্তভোগীদের ‘ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল’ করা ও ডেকে এনে হুমকি ধমকি দিয়ে মুখ বন্ধের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে অভিযুক্ত শিক্ষক, তদন্ত কমিটির সদস্য এবং অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক আবু সুফিয়ান বিরুদ্ধে। নবম শ্রেণির দিবা শাখার ওই ছাত্রী ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক আবু সুফিয়ানের কাছে প্রাইভেট পড়তে যেত। ওই শিক্ষক প্রাইভেট পড়ানোর ফাঁকে বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে অশালীন খুদেবার্তা (এসএমএস) পাঠিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে বিভাগীয় কমিশনারের কাছে আবেদন করা হয়। এরপর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি করে তাকে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়।
এনএম/এসএসএইচ