মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী প্রত্যেকেই আমাদের মডেল
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের যেসব বীর সন্তানেরা আত্মোৎসর্গ করেছেন তারা প্রত্যেকেই আমাদের মডেল। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন উদাহরণ আর নেই যে জাতির ৩০ লাখ মানুষ জীবন উৎসর্গ করেছেন। ২ লাখ মা-বোন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
শনিবার (২৫ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ‘একাত্তরে গণহত্যা, পাকিস্তানের দায় ও স্বীকৃতি প্রসঙ্গ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
উপাচার্য বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে একহাতে গুলি করে যাচ্ছেন আর অন্যদের বলছেন তোমরা চলে যাও আমি একাই লড়াই করব। এভাবে শত্রুর বিরুদ্ধে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে যুদ্ধ করে গেছেন। এর চেয়ে বড় বীর আর কোথায় খুঁজব! একেকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার কাহিনী শুনলে আমাদের মধ্যে রক্তে যে শিহরণ জাগে সেটি আমাদের চলার পথের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা।
প্রবন্ধকার অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা সেই হত্যাকাণ্ডের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনো পাইনি। পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞে গণহত্যার সব ধরনের উপাদান থাকা সত্ত্বেও জাতিসংঘ এখনো সেই স্বীকৃতি দেয়নি। আমাদের জাতীয় ঐকমত না থাকার কারণে আমরা গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাইনি। এছাড়া দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে স্বাধীনতাবিরোধীরা এই দেশের শাসন ক্ষমতায় ছিল যেকারণে তারা এটিকে গুরুত্ব দেয়নি। বরং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি গণহত্যা নিয়ে ধ্রুম্রজাল সৃষ্টি করেছে।
১৯৭১ সালের গণহত্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ২৫ মার্চের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায় করতে হলে তরুণ প্রজন্মের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনমত গড়ে তুলতে হবে। আর্মেনিয়া ১০০ বছর ধরে চেষ্টা করে গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ে সফল হতে পারলে আমরাও পারব। চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও কারিকুলাম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মো. মনিরুজ্জামান শাহীনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. নিজামউদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার প্রফেসর আবদুস সালাম হাওলাদার, স্নাতকোত্তর শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ বিন কাশেম, স্নাতকপূর্ব শিক্ষাবিষয়ক স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, গবেষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ।
এমএম/এমএ