গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা ১৯ জুন থেকে শুরুর প্রস্তাব
আগামী ১৯ জুন থেকে গুচ্ছ পদ্ধতির ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরুর প্রস্তাব করা হয়েছে। এরপর ২৬ জুন ও ৩ জুলাই এ পরীক্ষা নেওয়া হবে।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য (ভিসি) পরিষদের সভায় এ তারিখকে সম্ভাব্য ধরে প্রস্তাব করা হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় উপচার্য ড. মীজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ১৯ জুন থেকে গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষা শুরুর প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১৯ জুন, ২৬ জুন ও ১০ জুলাই তিনটি ইউনিটের পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সঙ্গে এ তারিখ সমন্বয় করা হবে। এছাড়া ইউনিটের তারিখ ঠিক করতে আরেকটি বৈঠকে তা ঠিক করা হবে।
বৈঠকে আগামী ১০ জুন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) স্নাতক ভর্তি পরীক্ষার তারিখ প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়া ১২ জুন প্রকৌশল গুচ্ছের তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপচার্য বলেন, এ তারিখগুলো সব প্রস্তাব করা হয়েছে। এরমধ্যে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির তারিখ ঘোষণা করবে। সেজন্য বিশেষ প্রয়োজনে এ তারিখ পরিবর্তনও হতে পারে।
তিনি জানান, বিভাগওয়ারী তারিখ পরিবর্তনের জন্য আরেকটি বৈঠক ডাকা হবে। সেখানে পূর্ণাঙ্গ তারিখ ঘোষণা করা হবে। বেশি দূরত্বে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেগুলোতে ইউনিট অনুযায়ী তারিখ দেওয়া হবে। যেমন, একই দিনে যাতে একই ইউনিটের পরীক্ষা না হয় সেটা সমন্বয় করা হবে।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভা বসে। সেখানে সাধারণত কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়ে আলোচনা করেন। সেখানে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসা এবং অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ তাদের সম্ভাব্য তারিখ সভায় উপস্থাপন করেন। সেখান থেকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আসা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্ভব্য তারিখ হিসেবে এ তিন দিনকে ঠিক করা হয়।
জানা গেছে, গুচ্ছতে তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য চার দিন সময় নেওয়া হয়েছে। একদিন বাড়তি রাখা হয়েছে। অন্য কোনো ইউনিভার্সিটি যদি এ চারদিনের কোনো একদিন ভর্তি পরীক্ষা নেয় তাহলে বিকল্প তারিখে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেন, আমরা একদিন বাড়তি চেয়েছি। অন্য কোনো ইউনিভার্সিটির পরীক্ষার তারিখের সঙ্গে আমাদের তারিখ মিলে গেলে আমরা বিকল্প তারিখে পরীক্ষা নেব।
প্রথমবারের মতো ২০ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে আগামী জুনের শেষের দুই শনিবার ও জুলাইয়ের প্রথম দুই শনিবার ধাপে ধাপে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। গুচ্ছতে ৭ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৯ মে ভর্তি পরীক্ষা হবে।
জানা গেছে, চলতি বছর ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এবং বুয়েট এবার স্বতন্ত্রভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। তবে ২০ সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি গুচ্ছে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি রুয়েট, চুয়েট ও কুয়েট একটি গুচ্ছে এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আরেকটি গুচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা হবে। এর বাইরে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে।
এদিকে দুই ধাপে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজন করবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে বুয়েট। প্রাথমিকভাবে আবেদন করা শিক্ষার্থীদের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হবেন তাদের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়া হবে। বুয়েটের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নেওয়া হবে ২৮ মার্চ। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণদের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে ১০ জুন।
১২ জুন রুয়েট, চুয়েট ও কুয়েটে গুচ্ছুতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২১, ২২, ২৭ ও ২৮ জুন এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৮ জুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭ জুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেরিটাইম ইউনিভার্সিটিতে ৪ ও ৫ জুন পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
তবে রাজশাহী, চবি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়নি। পরে তারা জানিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন এ তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদের সভাপতি এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, সভায় প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পায় সে জন্য একটির সঙ্গে অপর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার সময় আলাদা করা হয়েছে। আজকে শুধু দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তাদের বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ অনুযায়ী কীভাবে পরীক্ষা নেবে সেটি নির্ধারণ করবে। এরপর পরিষদের আরেকটি সভায় তা চূড়ান্ত করা হবে।
এনএম/এসএম