পাঠ্যবই মুদ্রণে বিলম্ব : এনসিটিবির কালো তালিকাভুক্ত ২৬ প্রতিষ্ঠান
দরপত্র অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নতুন পাঠ্যবই দিতে না পারায় ২৬টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব প্রতিষ্ঠান এক থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত এনসিটিবির বই ছাপার কাজে অংশ নিতে পারবে না।
এনসিটিবি চেয়ারম্যান (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এবার বই দেওয়ার ক্ষেত্রে যারা দেরি করেছে, তাদের বিলম্বের পরিমাণের ভিত্তিতে পাঁচ ধাপে ২৬টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে, যার সময়সীমা এক থেকে পাঁচ বছর। এই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা এনসিটিবির বই ছাপার দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
এনসিটিবি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিবছর ১ জানুয়ারি বই উৎসবের মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন পাঠ্যবই তুলে দেওয়া হতো। করোনার কারণে গত বছর তা সম্ভব হয়নি। চলতি বছরও হয়নি বই উৎসব। তবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই বই বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। তারপরও নির্দিষ্ট সময়ে বই বিতরণ সম্ভব হয়নি। এবার বই ছাপার কাজের জন্য পুনঃদরপত্র আহ্বান করতে হয়েছিল। ফলে সব শিক্ষার্থী সময়মতো বই হাতে পায়নি।
তারা জানায়, কালো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো দরপত্র অনুযায়ী পাঠ্যবই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে। তারা দরপত্রের সময়ের চেয়ে অস্বাভাবিক দেরি করেছে। তাই তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। বিষয়টি জানিয়ে এনসিটিবি সচিব নাজমা আখতারের সই করা চিঠি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ১৭টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের চেয়ে ৫১ দিনের বেশি সময় পর বই দিয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২৩) থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর এনসিটিবির বই ছাপার দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবে না।
প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ঢাকার অক্ষর বিন্যাস প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস, সেডনা প্রিন্টিং প্রেস আ্যান্ড পাবলিকেশনস, প্লাসিড প্রিন্টার্স অ্যান্ড প্যাকেজেস, মনির প্রেস আ্যান্ড পাবলিকেশনস, আবুল প্রিন্টিং, মেসার্স টাঙ্গাইল প্রিন্টার্স, হক প্রিন্টার্স, মেসার্স নাজমুন নাহার প্রেস, বনফুল আর্ট প্রেস, পিবিএস প্রিন্টার্স, ওয়াল্টার রোডের শিক্ষা সেবা প্রিন্টার্স, আমাজান প্রিন্টিং, উজ্জ্বল প্রিন্টিং প্রেস, বুলবুল আর্ট প্রেস, প্রেস লাইন, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরের এইচআর প্রিন্টার্স আ্যান্ড পেপার সেলার ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মহানগর অফসেট প্রিন্টিং প্রেস।
এছাড়া, ঢাকার ইউসুফ প্রিন্টার্স ও বগুড়ার শরীফা প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনসকে তিন বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে। দুই বছরের জন্য কালোতালিকাভুক্ত করা হয়েছে ঢাকার জিতু অফসেট প্রিন্টিং প্রেস, ন্যাশনাল প্রিন্টার্স এবং আর এম দাস রোডের ওয়েব টেক প্রিন্টার্সকে। এক বছরের জন্য কালোতালিকাতুক্ত করা হয়েছে ঢাকার বাকো অফসেট প্রেস, দিগন্ত অফসেট প্রেস, এ বি কালার প্রেস ও মেসার্স প্রিন্ট প্লাসকে।
এর বাইরে অঙ্গীকারনামা দিয়ে ছাড় পেয়েছে ছয়টি প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হলো- ঢাকার সোমা প্রিন্টিং প্রেস, রাব্বিল প্রিন্টিং প্রেস, মেরাজ প্রেস অ্যান্ড পাবলিকেশনস, লেটার এন কালার লি. সমতা প্রেস ও কাশেম আ্যান্ড রহমান প্রিন্টিং প্রেস।
এএজে/জেডএস