দশমাস পর উপবৃত্তি পাচ্ছে প্রাথমিকের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী
দশমাস পর উপবৃত্তি পাচ্ছে প্রাথমিকের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থী। ডাক বিভাগের ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস নগদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের এ উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ ভাতা বিতরণ শুরু হয়েছে। সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) প্রথম দফায় ছয় জেলার ৬৫৫টি স্কুলের ৮৬ হাজার ৪৫২ শিক্ষার্থীর অভিভাবকের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে উপবৃত্তি এবং শিক্ষা উপকরণ ভাতার টাকা পাঠানো হয়।
চলতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) নগদের মাধ্যমে এক কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে ভাতা ও উপবৃত্তি দেবে। প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় ডিজিটাল পদ্ধতিতে এ বৃত্তি বিতরণ বিশ্বের সর্ববৃহৎ ঘটনা।
এদিন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভাতা ও উপবৃত্তি বিতরণের উদ্বোধন করেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম, মো. আফজাল হোসেন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মহাপরিচালক মো. সিরাজ উদ্দিন এবং নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক উপস্থিত ছিলেন।
বিতরণ পদ্ধতির অস্বচ্ছতা ও দীর্ঘসূত্রিতার কারণে প্রায় এক বছর উপবৃত্তি এবং শিক্ষা উপকরণ ভাতা বিতরণ বন্ধ ছিল। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় গত ১৩ ডিসেম্বর নগদের সঙ্গে চুক্তি করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। নগদের মাধ্যমে উপবৃত্তি বিতরণের ফলে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে এবং সরকারের খরচ এক-তৃতীয়াংশে নেমে আসবে।
চুক্তি অনুযায়ী, শিক্ষার্থীর জন্ম সনদ ও অভিভাবকের মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বরসহ নতুন করে তাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধন করতে হয়। ফলে ভাতা বিতরণের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের ‘নগদ’ অ্যাকাউন্টে এ তাকা চলে যাচ্ছে। এমনকি উপবৃত্তির টাকা ক্যাশ-আউট করার খরচও পেয়ে যাচ্ছেন অভিভাবক। ফলে তাদের আর কোনো বাড়তি খরচ হবে না।
যথাযথ কাগজপত্র দিয়ে নিবন্ধন করায় শুরু দিকে কাজটি অনেক কঠিন হলেও ডাটাবেজ তৈরি হয়ে যাওয়ায় প্রতি বছরের শুরুতে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ হয়ে যাবে। একবার ডাটাবেজে নাম যুক্ত হলে সেটিকে শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবনের শেষ পর্যন্ত সরকার ব্যবহার করতে পারবে। সেক্ষেত্রে বছরের শুরুতে শুধু প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নাম যুক্ত হবে। ফলে ভাতা বিতরণে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।
অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, উপবৃত্তি ও শিক্ষা উপকরণ কেনার ভাতা বিতরণের কারণেই ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৮ শতাংশ কমে গেছে। তবে আগে যে অপারেটরের মাধ্যমে ভাতা বিতরণ করা হচ্ছিল, সেখানে অনেক সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে বলে আমরা দেখতে পাই। সে কারণে তাদের বদলে আমরা সরকারের একটি অপারেটরকে বেছে নিয়েছি। একে তো ‘নগদ’ আমাদের ডাক বিভাগের প্রতিষ্ঠান, তার উপর আমাদের অনেক টাকা খরচ বাঁচবে। সুতরাং নগদকে বেছে না নেওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।
নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক এ বিষয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বিতরণের দায়িত্ব নিয়েছি আমরা। নগদ সব সময়ই গ্রাহককে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী এবং তার মায়েরা সর্বাধিক গুরুত্ব পাবেন।
এনএম/এমএইচএস