‘বাংলা কিউআর’ কোডে ইচ্ছে মতো লেনদেনের সুযোগ
এখন থেকে ‘বাংলা কিউআর’ কোডে দৈনিক যতখুশি তত অংকের লেনদেন করতে পারবেন গ্রাহক। এতোদিন দৈনিক লেনদেনের সর্বোচ্চসীমা ছিল ২০ হাজার টাকা।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
দেশের সব ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস প্রোভাইডার (এমএফএসএফ), পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার এবং পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটরে পাঠানো নির্দেশনায় বলা হয়, আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ব্যাংকগুলোর অ্যাপে ‘বাংলা কিউআর’ কোড পেমেন্ট সিস্টেম চালু করতে হবে।
জানা গেছে, নির্দিষ্ট ব্যাংকের অ্যাপের মাধ্যমে মাস্টার কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট অথবা প্রিপেইড কার্ড থেকে সবধরনের আর্থিক লেনদেন করতে সম্প্রতি চালু হয় ‘বাংলা কিউআর’ কোড পেমেন্ট সিস্টেম। এর ফলে গ্রাহকদের বিভিন্ন পেমেন্ট নেটওয়ার্কের আলাদা কিউআর কোড স্ক্যান করতে হয় না। তবে এই পদ্ধতিতে লেনদেনের জন্য একক ব্যক্তিক হিসাবে দৈনিক লেনদেনের সর্বোচ্চসীমা ২০ হাজার টাকা ছিল। এখন ব্যক্তি হিসেবে এই সর্বোচ্চ লেনদেনের সীমা উঠিয়ে নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে সন্দেহজনক ও বড় অংকের লেনদেনগুলো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান যথাযথভাবে যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো তাদের সীমা নির্ধারণ করতে পারবে।
রাস্তায় পাশে ঝালমুড়ি খাবেন, ফল কিনবেন কিংবা মুচির কাছে জুতা পালিশ এজন্য এখন আর নগদ টাকা দিয়ে এখন আর মূল্য পরিশোধ করতে হবে না। শুধুমাত্র একটা অ্যাপ থাকলেই চলবে। কুইক রেসপন্স-কিউআর কোডে দেওয়া যাবে পণ্যের দাম-সেবার মূল্য। বড় শোরুম-চেইন শপ থেকে শুধু করে ফুটপাত ও ছিন্নমূল ব্যবসায়ীদের পণ্যের মূল্য পরিশোধ হবে কিউআর কোডে।
এর আগে গত ১৮ জানুয়ারি ক্যাশলেস বা নগদবিহীন বাংলাদেশ প্রচারণার উদ্বোধন করা হয়। বাংলা কিউআর পরিশোধ ব্যবস্থায় ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ গঠন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এর লক্ষ্য অর্জন এবং কিউআর কোডের পেমেন্টসহ সব ডিজিটাল লেনদেনের সুফল সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে জানাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় ১২০০ মার্চেন্ট নিয়ে মতিঝিলে এই ‘ক্যাশলেস বাংলাদেশ’ উদ্যোগটির যাত্রা শুরু হয়। পরবর্তী সময়ে সারা বাংলাদেশে এই উদ্যোগের প্রচারণা চলছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, পণ্য বা সেবামূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে নগদ অর্থ, কার্ড বা চেক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। নগদ অর্থে পরিশোধ ঝুঁকিপূর্ণ, চেক পরিশোধ সময়সাপেক্ষ, জটিল। অন্যদিকে কার্ড ব্যবহারের জন্যে ব্যাংক বা এমএফএস-গুলোকে ডিজিটাল পেমেন্ট অবকাঠামো বিনির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণে বিপুল বিনিয়োগ করতে হয়। ফলে কার্ডে মূল্য পরিশোধ ব্যবস্থা মার্চেন্টদের জন্য ব্যয়বহুল। ছোট মার্চেন্টের (যেমন- ডাব বিক্রেতা, ঝালমুড়ি বিক্রেতা, মুচি ইত্যাদি) পক্ষে এ ব্যয় বহন করা সম্ভব নয় বিধায় প্রান্তিক পর্যায়ে ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসার কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় অর্জিত হয়নি। ডিজিটাল পেমেন্টের প্রসারে পৃথিবীব্যাপী লো কষ্ট সলিউশন প্রচলনের তাগিদ রয়েছে। কুইক রেসপন্স (কিউআর) ডিজিটাল পেমেন্ট এমনি একটি লো কষ্ট সলিউশন। বাংলাদেশে কিছু ব্যাংক ও এমএফএস এর কিউআর কোড থাকলেও সর্বজনীন কিউআর ছিল না। শুধুমাত্র ওই ব্যাংক এমএফএস গ্রাহকরা পারস্পরিক লেনদেন সীমাবদ্ধ ছিল।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বজনীন বাংলা কিউআর প্রবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বাংলা কিউআর উদ্যোগে ১০টি ব্যাংক, ৩টি এমএফএস ও ৩টি আন্তর্জাতিক পেমেন্ট স্কিম অংশগ্রহণ করেছে। বাংলা কিউআর এ অংশগ্রহণকারী যে কোনো ব্যাংক ও এমএফএস অ্যাকাউন্টধারী গ্রাহক বাংলা কিউআর এ অংশগ্রহণকারী যে কোনো ব্যাংক বা এমএফএস অ্যাকাউন্টধারী মার্চেন্টকে পণ্য বা সেবা মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন।
এসআই/এসএম