নাভিশ্বাস তুলে ছাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম
২০০-২৫০ টাকার নিচে নেই কোনো ভালো মাছ, ১৭০ টাকা কেজি ব্রয়লার মুরগি, ৬৫০ টাকা কেজি গরুর মাংস, ১০০০ টাকা কেজি খাসির মাংস, ভরা মৌসুম থাকলেও চড়া সবজির বাজার। মোটা চালের কেজি ৫২ টাকা, সয়াবিন তেল ১৬৫-১৬৮ টাকা। অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও বাড়ন্ত। বাজারের এমন পরিস্থিতিতে অনেকটা অসহায় নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষ। কিছু দাম কমানোর আশায় এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরে ঘুরে হয়রান তারা।
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর নিউমার্কেটের পাইকারি ও খুচরা মাছ, সবজি, মুদি বাজার ঘুরে এমন পরিস্থিতিই দেখা যায়। আবার পাইকারি বাজারেই এমন বেশি দামে হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতেও দেখা যায় অনেককে।
সরেজমিনে নিউমার্কেটের মাছ ও সবজির বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বড় রুই মাছ ৩০০-৩৫০ টাকা, মাঝারি রুই মাছ ২৫০-২৭০ টাকা, ছোট কাতল মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, বড় কাতল ৪০০ টাকা, বড় পাঙ্গাশ মাছ ২৮০-৩০০ টাকা, আকার ভেদে ইলিশ মাছ ৭০০-১২০০ টাকা, সিলভার কার্প মাছ ২০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ টাকা, কালিবাউশ ৩৫০ টাকা, ফালি মাছ ৪৫০ টাকা, আইর ৬০০ টাকা, বড় কৈ ৬০০ টাকা, বেলে ৪৫০ টাকা, শিং ৮৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
ছোট মাছের মধ্যে চিংড়ি ৩০০ টাকা, কাচকি ৪৫০ টাকা, মলা ৩০০ টাকা, টাটকিনি ২৫০ টাকা, পাবদা ৫০০-৬০০ টাকা, গলদা চিংড়ি আকার ভেদে ৬৫০-৭৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। সামুদ্রিক মাছের মধ্যে বড় সুরমা মাছ ৩০০ টাকা, রূপচাঁদা ৬০০-৮০০ টাকা, লাল কোরাল ৫০০-৬০০ টাকা ও বাটা মাছ ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছ বাজার কিছুটা চড়া জানিয়ে শাহ আলম নামে মাছ বিক্রেতা বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত মাছের সরবরাহ থাকার পরও খাবারের দাম ও জ্বালানি খরচ বেশি হওয়ায় বাজারে এর প্রভাব পড়ছে। শুধুমাত্র হোটেলগুলোতেই বড় মাছ বিক্রি হচ্ছে। খুব কম সংখ্যক সাধারণ মানুষই বড় মাছ কিনছে। অতিরিক্ত দাম নিয়ে আমাদেরও কিছু বলার নেই।
অপরদিকে বাজারে শাক সবজির পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও চড়া সবজির বাজার। টমেটো ৪০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, কাঁচা পেঁপে ৫০ টাকা, শসা ৩৫ টাকা, গাজর ৩০ টাকা, ফুলকপি ৪০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০, পেঁয়াজ ৫০-৫২ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, রসুন ১১০-১২০ টাকা, গোল আলু ২০ টাকা, দেশী আদা ৭০-৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও লাউ ৯০-১০০ টাকা, ব্রুকলি , ফুলকপি, পাতা কপি ৪০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে।
মুদি পণ্যের মধ্যে মুগডাল ১২৫ টাকা, বুটের ডাল ৮০ টাকা, এংকর ডাল ৪৫ টাকা, মসুর ডাল ১১৫ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, খোলা চিনিগুড়া চাল ৯০-১০০ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭০ টাকা, চিনি ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
শামসুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় এমন কোনো পণ্য নেই যার দাম বাড়েনি। সংসার চালানো খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ তারা হিমশিম খাচ্ছি। সবকিছুর দাম এভাবে বাড়তে থাকলে চলার উপায় থাকবে না। কিছুটা কম দামে জিনিস কেনার আশায় নিউমার্কেটে এসেছিলাম। এখানেও দেখি একই অবস্থা। পাইকারি খুচরা সবখানেই প্রায় একই রকম দাম।
স্বস্তি নেই আমিষের সহজলভ্য উপাদান মুরগির বাজারেও। কেজি প্রতি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ টাকা, লাল লেয়ার মুরগি ২৬৫-২৭০ টাকা, সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-২৯০ টাকায়। তাছাড়া গরু ও খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই।
আরএইচটি/এসকেডি