ব্যাংকে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের আহ্বান বিডব্লিউএবির
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারি ব্যাংকের এন্ট্রি লেভেলে বেঁধে দেওয়া সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে ব্যাংকারদেও নিয়ে গঠিত সংগঠন ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (বিডব্লিউএবি)।
একই সঙ্গে সুনির্দিষ্ট ও প্রমাণিত কোনো অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও চাকরিচ্যুত কিংবা পদত্যাগে বাধ্য হওয়া কর্মীদের পুনর্বহালেরও আদেশ পরিপালনের অনুরোধ করেছে সংগঠনটি।
রোববার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) কাছে এ আহ্বান জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বিডব্লিউএবি।
সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট ও মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী মো. শফিকুর রহমানের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যুকরা বিআরপিডি সার্কুলারের (নং ২০/০১/২০২২) বিষয়ে বিএবি এবং এবিবি ইতোমধ্যে গভর্নর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেছে। আমরা আশা করি উভয়পক্ষের মধ্যে আলোচনায় সার্বিক বিষয় স্পষ্টিকরণ হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ করে দ্রব্যমূল্যের বিষয় বা মুদ্রাস্ফীতি বিবেচনায় সময়ে সময়ে সরকারি, বেসরকারি বা ব্যাক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানেও কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতা পর্যালোচনা করে পুনর্নির্ধারণ করা হয়। এতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়, কর্মপরিবেশ সুন্দর হয় এবং সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে সুফল বয়ে আনে।
তাই ব্যাংকার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিএবি ও এবিবিকে ৬টি বিষয় বিবেচনার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা যাচ্ছে :
১. বাংলাদেশ ব্যাংকের ইস্যুকরা বিআরপিডি সার্কুলার নং ০২ তারিখ ২০/০১/২০২২ এবং সার্কুলার নং ২১ তারিখ ১৬/০৯/২০২১ যথাসম্ভব দ্রুত বাস্তবায়ন করা।
২. বেতন কাঠামো সহজতর করার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তাদের পদবি বিন্যাস প্রণয়ন করা: যেমন- শিক্ষানবিশ অফিসার, অফিসার, সিনিয়র অফিসার, প্রিন্সিপাল অফিসার, সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, এডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও।
৩. সাধারণভাবে সব ব্যাংক কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট প্রদান করা।
৪. সব ব্যাংক-এ একই ধরনের পদোন্নতি নীতিমালা প্রণয়ন এবং তদনুসারে অন্তত প্রতি তিন ব্ৎসর অন্তর পদোন্নতি কর্যকর করা।
৫. অধিক সন্তোষজনক কর্মফলের জন্য ব্যাংক কর্মীদের প্রতি দুই বৎসর অন্তর এক্সসেলারেইটেড পদোন্নতি বিবেচনা করা।
৬. প্রত্যেক ব্যাংকের বাৎসরিক মুনাফার ভিত্তিতে ইনসেনটিভ বোনাস দেওয়া।
বাংলাদেশ ব্যাংক গত ২০ জানুয়ারি নির্দেশনায় ব্যাংকের শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাদের ২৮ হাজার টাকা ও শেষে ৩৯ হাজার টাকা বেতন নির্ধারণ করে দেয়। পাশাপাশি কর্মচারীদের সর্বনিম্ন বেতন ২৪ হাজার নির্ধারণ করে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
নির্দেশনায় আরোও বলা হয়, শুধু আমানত সংগ্রহের লক্ষ্য অর্জন করতে না পারায় কাউকে পদোন্নতি বঞ্চিত বা চাকরিচ্যুত করার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। পরে ওই নির্দেশনা স্পষ্টিকরণ করে ২৫ জানুয়ারি বলা হয়, প্রমাণিত অভিযোগ ছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকুরিচ্যুত করা যাবে না। এছাড়া অদক্ষতার অজুহাত দেখিয়ে কর্মীদের পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত অথবা পদত্যাগে বাধ্য না করারও কথাও বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তারও আগে ব্যাংকে কর্মী ছাঁটাই বন্ধ ও চাকরিতে পুনর্বহালের বিষয়ে ২০২১ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর নির্দেশনা জারি করে নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।
এসআই/এসএম