পোশাক রফতানি বেড়েছে ২২ শতাংশ
গেল অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বর) পোশাক রফতানির প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্যে এই চিত্র দেখা গেছে।
ইপিবির তথ্যমতে, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নভেম্বরে) ১ হাজার ৯৭৯ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি হয়েছে। যা দেশীয় মুদ্রায় ১ লাখ ৬৮ হাজার ২১৫ কোটি টাকার সমান। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে যে পণ্য রফতানি হয়েছে, তা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি।
চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে পণ্য রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৭৪৭ কোটি ডলার। তবে শেষ পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৩ দশমিক ২৭ শতাংশ রফতানি বেশি হয়েছে। মোট রফতানির মধ্যে জুলাই-নভেম্বরে তৈরি পোশাক খাতে রফতানির বেড়েছে ২২ দশমিক ৯ শতাংশ।
পাঁচ মাসের মধ্যে ২০২১ সালের নভেম্বরে পোশাক রফতানি ৩২ দশমিক ৩৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যার মধ্যে নিটওয়্যার খাতে প্রবৃদ্ধি ৩৩ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং ওভেন খাতে প্রবৃদ্ধি ৩১ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
গত তিন মাসের প্রবৃদ্ধির ধারা ইতিবাচক হলেও এই প্রবৃদ্ধি স্থায়ী নাও হতে পারে। লকডাউন শিথিলের কারণে বিগত মাসগুলোতে পোশাকের ব্যবহার ও চাহিদা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে ঢাকা পোস্ট জানান বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল।
তিনি বলেন, গত নভেম্বরে ৩ দশমিক ২৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের পোশাক রফতানি হয়েছে, অর্থাৎ ৩২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বরে রফতানির পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
তিনি বলেন, এ বছরের অক্টোবরে ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার রফতানি করেছি এবং নভেম্বরে সেটি ৩ দশমিক ২ ডলারে নেমে এসেছে। যদিও আমরা সাধারণত একই বছরের পর পর মাসের রফতানির মধ্যে তুলনা করি না, কেননা এটি অনেক সময় বিভ্রান্তির সৃষ্টি করতে পারে।
বিজিএমইএর পরিচালক বলেন, টেক্সটাইল, ডাইস ও রাসায়নিকসহ অন্যান্য কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া দরকার। ফ্রেইট খরচ রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। এটা স্পষ্ট যে রফতানি মূল্য যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তা মূলত কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিজনিত ব্যয়কে সমন্বয় করেছে। সুতরাং যে রফতানি প্রবৃদ্ধি আমরা দেখতে পাচ্ছি তা কোনোভাবেই প্রকৃত প্রবৃদ্ধি নয়।
যদিওবা গত কয়েক মাসে রফতানি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে এটি ভুলে গেলে চলবে না যে, আমাদের কারখানাগুলো মহামারির ক্ষয়ক্ষতি এখনও পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
ওমিক্রন নামক নতুন ভ্যারিয়েন্টের আগমনে বৈশ্বিক অর্থনীতি ইতোমধ্যেই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। করোনার প্রথম ঢেউ থেকেই ক্রেতারা সতর্ক পদক্ষেপ নিয়ে চলেছে, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই কড়াকড়ি আরও বৃদ্ধি পাবে। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলো তাদের খুচরা বাজারের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বেশ ভাল সময় নেবে, যা আমাদের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ। গত বছরের মতো এ বছরেও বড়দিনের বিক্রি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কারখানাগুলো তাদের উৎপাদন চালিয়ে নিতে হুমকির মধ্যে পড়বে।
এটি অবশ্যই অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে, গত কয়েক মাসে আমরা রফতানির প্রবৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু কোনোভাবেই প্রকৃত অবস্থা ভুল ব্যাখ্যার কোন সুযোগ নেই। বরং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সামনের দিনগুলোতে যেকোনো ধরনের ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় আমাদের অতি সতর্ক হতে হবে বলে জানান রুবেল।
এমআই/ওএফ