বেসরকারি ঋণে বাড়েনি গতি
বিনিয়োগ বাড়াতে কমানো হয়েছে ঋণের সুদহার, দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের সুরক্ষায় রয়েছে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার সরকারি প্রণোদনা প্যাকেজও। কিন্তু তারপরও আশানুরূপ বাড়ছে না বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, গত ডিসেম্বরে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ। আগের মাস নভেম্বরে যা ছিল ৮ দশমিক ২১ শতাংশ। এর আগে গত অক্টোবরে প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। মূলত সুদ যোগ হয়ে ঋণস্থিতি বৃদ্ধি এবং শিথিলতার সুযোগে অনেকে ঋণ পরিশোধ না করায় ডিসেম্বর শেষে প্রবৃদ্ধি সামান্য বেড়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত অর্থবছর থেকেই বেসরকারি ঋণে ধীরগতি। মহামারিতে ব্যবসা-বাণিজ্য মন্দার কারণে তা আরো তলানিতে চলে গেছে। উদ্যোক্তারা এখন নতুন করে বিনিয়োগে আসছে না। অনেকে সংকটে টিকে থাকতে বিদ্যমান ব্যবসা সংকুচিত করছে। সব মিলিয়ে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ মন্থর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতে মোট ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৪১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এ অংক আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১০ লাখ ৫৩ হাজার ১৫১ কোটি টাকা। এক বছরে ঋণ বেড়েছে ৮৮ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা বা ৮ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
এদিকে করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার এবং সরকারের নির্ধারিত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মুদ্রানীতিতে চলতি অর্থবছরের জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি আগের বছরের মত অপরিবর্তিত রেখে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ঋণ প্রবৃদ্ধি নির্ধারিত লক্ষ্যের অনেক নিচে রয়েছে।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছিল ১৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। কিন্তু তা অর্জন হয় মাত্র ৮ দশমিক ৬১ শতাংশ। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান রাহমান এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বলেন, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী বৈদেশিক বিনিয়োগ কমেছে প্রায় ৫০ শতাংশ। এমন অবস্থায় বর্তমানে বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ পরিস্থিতি রাতারাতি পরিবর্তন হবে না। তাই দেশের বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরিতে বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের প্রদত্ত সুবিধা স্থানীয় উদ্যোক্তাদের দেওয়া জরুরি বলে জানান তিনি। পাশাপাশি বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য ‘ইকোনোমিক ডিপ্লোম্যাসি’-এর উপর আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন বলেন ব্যবসায়ীদের এ নেতা।
এসআই/এমএইচএস