সয়াবিন তেলের লিটার ১৫৫ টাকা, দাম কমানোর দাবি ক্রেতাদের
ভোজ্যতেলের দাম খোলা বাজারে আরও এক দফা বাড়ল। লিটারপ্রতি বোতলজাত তেলের দাম বেড়েছে ২ থেকে ৫ টাকা। সবজি, চাল, ডালের পরে ভোক্তাদের জন্য নতুন করে দুঃসংবাদ তেলের দাম আরও বেড়েছে। তাতে বড় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যআয়ের মানুষ। ঊর্ধ্বমুখী বাজারে এখন সংসার চালানোই দায় উল্লেখ করে দাম কমানোর দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।
সোমবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর বাজারগুলোতে লিটারপ্রতি সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫৪-১৫৫ টাকায়। দুই লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৩০৮ টাকায়। আর ৫ লিটারের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৭২৮ টাকা লিটার। অথচ ব্যবসায়ীরা লিটারপ্রতি সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করেছিলেন ১৫৩ টাকা।
বাজারে লিটারপ্রতি খোলা তেলে বিক্রি হচ্ছে ১৪৪-১৫০ টাকা দরে। পামওয়েল তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৫৪ লিটার। খোলা পামওয়েল তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে, যা নির্ধারিত দামের চেয়ে লিটারপ্রতি ২ থেকে ৫ টাকা বাড়তি।
সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, বর্তমানে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫-১৫৫ টাকায়, যা এক মাস আগেও ছিল ১৪০-১৫৫ টাকা। অর্থাৎ এক মাসের ব্যবধানে লিটার প্রতি বেড়েছে ৫ টাকা, এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৪০ টাকা। ২০২০ সালের একই সময়ে দাম ছিল ১০০-১১০ টাকা লিটার।
এক সপ্তাহ আগেও খোলা বাজারে সয়াবিন তেল প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকা থেকে ১৩৬ টাকা দরে। সোমবার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা দরে। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে লিটারপ্রতি দাম ৪-৫ টাকা বেড়েছে। গত বছর একই সময়ে এ তেল বিক্রি হয়েছিল ৮৮-৯৩ টাকা লিটার। এক বছরের ব্যবধানে দামে বেড়েছে ৪৫-৫০ টাকা।
টিসিবির তথ্যমতে, রাজধানীতে বোতলজাত পামওয়েল তেল বিক্রি হচ্ছে লিটারপ্রতি ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও দাম ছিল লিটারপ্রতি ১২৮-১৩০ টাকা। ২০২০ সালের ১০ অক্টোবর বোতলজাত পামওয়েল তেল বিক্রি হয়েছিল লিটারপ্রতি ৮৪ টাকা থেকে ৯০ টাকায়। সেই হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে বোতলজাত পামওয়েল তেলের দাম বেড়েছে ৪০-৪৫ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির মতে, খোলাবাজারে পামওয়েল তেল লিটারপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩০ টাকায়। যা এ সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ১২৫-১২৮ টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ২ টাকা। এক মাস আগে খোলাবাজারে পামওয়েল তেল বিক্রি হয়েছিল ১১৬ থেকে ১২০ টাকায়। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২০ সালের একই দিন বিক্রি হয়েছিল ৮২-৮৪ টাকা লিটারে। সেই হিসাবে এক মাসের ব্যবধানে খোলা পামওয়েল তেলের দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা, বছরের ব্যবধানে দাম বেড়েছে ৪০-৪৬ টাকা।
চাল, ডালের পর আরেক দফা তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ায় বড় বিপাকে পড়েছেন নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যআয়ের পরিবারগুলো। সবার যেন হাত পুড়ছে বাজারে গিয়ে। তারা আকুতি জানাচ্ছেন এ অবস্থা থেকে উত্তরণে।
মালিবাগ বাজারে আসা ক্রেতা রমিজ উদ্দিন হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, সপ্তাহখানেক আগে তেল কিনেছি ১৫২ টাকা লিটারে। আজ কিনতে হয়েছে ১৫৫ টাকা লিটার। তিনি বলেন, পেঁয়াজের কেজি ৮০ টাকা, মরিচের কেজি ২০০ টাকা, চালের কেজি ৭০ টাকা, প্রতিটি জিনিসেরই দাম বাড়ছে।
ব্যবসায়ীরা ডাকাতি করছে রমিজ উদ্দিন বলেন, কথা নেই, বার্তা নেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াচ্ছে। আমরা জিম্মি হয়ে আছি।
রামপুরা বাজারে কথা হয় ক্রেতা মনিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনায় আমাদের আয় কমে গেছে। যাতায়াত ও ঘর ভাড়ার টাকা যোগাতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু এ সময় নতুন করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ার হিড়িক লেগেছে। সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা। না হয় আমাদের না খেয়ে মরতে হবে।
কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম বাড়তি। যেসব প্রতিষ্ঠানগুলো তেল আমদানি করছে, তারা তেলের দাম বাড়াচ্ছে। আমরা বেশি দামে এনে তো আর লোকসান দিয়ে বিক্রি করব না। আমাদের তো লাভও হচ্ছে না, কিন্তু ব্যবসা ধরে রাখতে কম করে তেল রাখছি।
এমআই/এসএসএইচ