গার্মেন্টস শিল্পে প্রচুর অর্ডার আসছে
করোনার প্রকোপ কমে আসায় দেশের গার্মেন্টস শিল্পে প্রচুর অর্ডার আসছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ-এর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বিজিএমইএ ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
আবু তৈয়ব বলেন, আল্লাহর অশেষ রহমত ছিল, করোনার যে প্রকোপ তা আমাদের দেশে কমে এসেছে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্পে অর্ডার এসে ভরে গেছে। কারণ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিধিনিষেধ রয়েছে। আমাদের এখানে নেই। আমরা সেটাকে অতিক্রম করে দেশকে একটা মজবুত অবস্থানে নিতে পেরেছি।
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম শহরের বাইরে মিরসরাই ও আনোয়ারা অর্থনৈতিক জোনের মধ্যে পোশাক শিল্প এবং পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্ট কারখানা স্থাপনে স্বল্প মূল্যে ভূমি বরাদ্দ এবং অবকাঠামোগত সুবিধা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। চট্টগ্রামে নতুন কারখানা স্থাপনসহ কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে নতুন বিনোয়োগে সহজ ও স্বল্প সুদে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে বিমানের আন্তর্জাতিক কানেকটিভিটি বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
বিজিএমইএ প্রথম সহ-সভাপতি সৈয়দ নজরুল বলেন, বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট সেবাকে অত্যাবশ্যকীয় ও জরুরি সেবা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বন্দর কাস্টমস পরিবহন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের ধর্মঘটের মাধ্যমে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত করার অপচেষ্টা বন্ধ করা প্রয়োজন।
ব্রান্ডিং ছাড়া পোশাক শিল্পকে টিকিয়ে রাখা যাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিক। শ্রমঘন শিল্প হওয়ায় আমরা ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছি।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত ৪ হাজার ৭০০ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২ হাজার ৭৩৪টি বন্ধ হয়ে গেছে। বাকি ১ হাজার ৯৬৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১ হাজার ৬০০টি আমদানি-রফতানি কাজে নিয়োজিত আছে। চট্টগ্রামে ৬৭৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বন্ধ ৩৯৮টি, আমদানি-রফতানি কাজে নিয়োজিত আছে ১৯০টি। করোনা পরিস্থিতিতে গত মার্চ থেকে আগস্টের মধ্যে ঢাকায় ২৮১টি ও চট্টগ্রামে ৩০টি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে।
এক দশক আগেও তৈরি পোশাক রফতানিতে চট্টগ্রামের ৪০ শতাংশ অংশগ্রহণ থাকলেও গ্যাস, বিদ্যুৎ সংকট, অবকাঠামোগত বিভিন্ন সমস্যার কারণে ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, করোনাকালীন সময়ে ৩.৭৫ বিলিয়ন ডলারের রফতানি আদেশ বাতিল হয়েছে বা স্থগিত হয়েছে। আর চট্টগ্রাম পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রফতানি আদেশ বাতিল বা স্থগিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে সাবেক সহ-সভাপতি এসএম আবু তৈয়ব আরও বলেন, আমরা দুর্নীতি করতে চাই না। দুর্নীতির শিকারও হতে চাই না। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে অটোমেশন চাই। পোশাক শিল্পে লুকানোর মতো কোনো জায়গা নেই। ইজ অব ডুয়িং বিজনেস চাই। আমরা আমলাতান্ত্রিক জটিলতার শিকার হতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীতে আজকের দিনে অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে মজবুত অবস্থানে বাংলাদেশ। পাশ্ববর্তী ভারত, ভিয়েতনাম থেকে শুরু করে কোনো দেশ আমাদের মতো অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল অবস্থায় নেই।
মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএর সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসিরুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, মঈনুদ্দিন আহমেদ মিন্টু, সাহাবুদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ এর সহ-সভাপতি রকিবুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
কেএম/জেডএস