আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এসএলআর সংরক্ষণে কড়াকড়ি
ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বিধিবদ্ধ তরল সম্পদ সংরক্ষণে (এসএলআর) কড়াকড়ি আরোপ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন থেকে ঋণের জামানত হিসাবে রাখা মেয়াদি আমানতকে তরল সম্পদ হিসেবে দেখানো যাবে না।
জানা গেছে, সম্প্রতি বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখা মেয়াদি আমানত তাদের গ্রাহককে সময়মতো ফেরত দিতে পারছে না, এমন অভিযোগ রয়েছে। তাছাড়া অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এফডিআরের বিপরীতে ঋণ নিয়ে ওই এফডিআরকে তরল সম্পদ হিসেবে দেখাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নির্দেশনা দিয়ে সোমবার (২৩ আগস্ট) আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বলেন, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান অন্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এফডিআর রেখে এর বিপরীতে ঋণ নিচ্ছে। ওই এফডিআর চাইলেই ভাঙাতে পারে না। তাই এটা তরল সম্পদ হবে না। এবারের সার্কুলারে ওই স্থিতিকে দায়মুক্ত থাকতে হবে, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করে বলে দেওয়া হয়েছে।’
২০১৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রকাশিত সার্কুলারে বলা হয়, ‘তরল সম্পদ হিসাবায়নে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নগদ স্থিতি (বাংলাদেশি মুদ্রা ও নোট), বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত স্থিতি, অন্যান্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রক্ষিত স্থিতি, দায়মুক্ত বাংলাদেশ ট্রেজারি বিল ও বন্ড, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা বা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত সম্পদ অন্তর্ভুক্ত হবে।’
নতুন সার্কুলারে ২০১৭ সালের ওই সার্কুলারের ‘অন্যান্য ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রক্ষিত দায়মুক্ত স্থিতি’ কথাটি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে মেয়াদি আমানতকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এসএলআর হিসেবে বিবেচনা না করার জন্য নির্দেশনা দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকের তুলনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনেক কম এসএলআর ও সিআরআর রাখতে হয়। ব্যাংকগুলোর মোট তলবি ও মেয়াদি দায়ের ৪ শতাংশ সিআরআর হিসেবে রাখতে হয়। আর প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ১৩ শতাংশ এসএলআর ও ইসলামী ব্যাংকগুলোর সাড়ে ৫ শতাংশ এসএলআর হিসেবে রাখতে হয়। তবে মেয়াদি আমানত গ্রহণকারী একটি প্রতিষ্ঠানে দেড় শতাংশ সিআরআর এবং ৫ শতাংশ এসএলআর রাখতে হয়। আর আমানত নেয় না এমন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এসএলআর রাখতে হয় আড়াই শতাংশ।
বর্তমানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বিসাপ্তাহিক নগদ জমা সংরক্ষণের গড় হার ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগে এ হার ছিল ২ দশমিক ৫০ শতাংশ। দেশে কার্যরত ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হাতে নগদ তারল্য বাড়াতে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এসআই/জেডএস