দৈনিক লেনদেন ৫ হাজার কোটি ছাড়িয়ে যাবে : বিএসইসি কমিশনার
কিছু ভুল সংশোধনের পরই পুঁজিবাজার চাঙা হয়েছে। লেনদেন দেড়শ কোটি টাকা থেকে ৩ হাজার কোটি টাকার উন্নীত হয়েছে। পরিকল্পনা অনুসারে ভালো ভালো কোম্পানি ও বন্ডসহ নতুন নতুন প্রোডাক্ট বাজারে আনতে পারলে এ বছরের মধ্যেই পুঁজিবাজারে দৈনিক লেনদেন ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। বাজার সামনে বহুদূর এগিয়ে যাবে।
ঢাকা পোস্টের সঙ্গে একান্ত আলাপকালে এসব প্রত্যাশার কথা জানান পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ।
বর্তমান কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিএসইসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন ২০২০ সালের ১৭ মে। এরপর কমিশনের সদস্য হিসেবে যোগ দেন অধ্যাপক শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ, ড. মিজানুর রহমান এবং আব্দুল হালিম।
এই কমিশনের নেতৃত্বের প্রথম লেনদেনের দিন অর্থাৎ ৩১ মে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচক ছিল চার হাজার ৬০ পয়েন্টে। সেখান থেকে ২২ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২ হাজার ৭৮২ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৮৪২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
আর লেনদেন ১৪৩ কোটি ২৯ লাখ ২৬ হাজার টাকা থেকে ২০-২২ গুণ বেড়ে এখন প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকায়। লেনদেন ও সূচক বাড়ায় প্রায় দেড় বছরে ডিএসইর বাজার মূলধন ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৭৬ কোটি ১৬ লাখ ৬৫ হাজার টাকা থেকে ২ লাখ ৩৮ হাজার ২৬০ কোটি ৭ লাখ ৫৮ হাজার টাকা বেড়ে রোববার (২২ আগস্ট) দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৪৩৯ কোটি ২৪ লাখ ২৩ হাজার টাকায়।
কিছু ভুল সংশোধনের পরই এ অবিস্মরণীয় উত্থান হয়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক সামসুদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, সামনে ভালো ভালো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। বিভিন্ন ধরনের বন্ড চালুসহ অচিরেই নতুন নতুন প্রোডাক্ট আসবে। তাতে বিনিয়োগকারীরা বেশ খুশি হবে। তারা বাজারে বিনিয়োগের জন্য আকৃষ্ট হবে।
‘আমরা পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করতে পারলে চলতি বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারের লেনদেন ৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়াবে। লেনদেন বাড়লে অটোমেটিক সূচক ও বাজার মূলধন বাড়বে। সূচক এখন ৭ হাজার ছুঁইছুঁই, এটা আরও অনেক দূর যাবে,’ যোগ করেন তিনি।
শেখ সামসুদ্দিন বলেন, দেশের অর্থনীতির সত্যিই এখন অনেক অগ্রগতি হয়েছে। এ অগ্রগতির সঙ্গে তালমিলিয়ে পুঁজিবাজার চলবে। অর্থনীতিতে এখন পুঁজিবাজারের অবদান ২০ শতাংশ রয়েছে। জিডিপিতে শতভাগ অবদান রাখবে পুঁজিবাজার। ফলে পুঁজিবাজারের আকার আরও অনেক বাড়বে।
বিএসইসির এই কমিশনার জানান, ডিএসইতে নতুন কোম্পানির লেনদেন কিংবা এক হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলেই সফটওয়্যারে কারিগরি ক্রুটির কারণে লেনদেন বন্ধ হয়ে যেত। সেই সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। এছাড়া পুঁজিবাজারে যাতে কোনো ধরনের কারসাজি না হয় সে জন্য মনিটরিং করা হচ্ছে।
অসৎ উপায়ে মুনাফা অর্জনের জন্য কোম্পানি কর্তৃপক্ষের যোগসাজশে কেউ যেন পুঁজিবাজারে ভুয়া মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশ করতে না পারে তার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক সামসুদ্দিন। তিনি বলেন, কিছু কোম্পানি সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করে যে ‘সাতটি বা পাঁচটি জাহাজ কিনছে’, ‘বিদেশিরা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করছে’। এরপর শেয়ারের দাম বাড়ার পর শেয়ার বিক্রি করে দেয়। কিন্তু বাস্তবে এরকম জাহাজ কিংবা বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে না। অর্থাৎ ভুয়া সংবাদ প্রকাশ করে শেয়ার বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়। আর যাতে এসব পিএসআই প্রকাশের মাধ্যমে কোনো কারসাজি করতে না পারে সেই বিষয়টি দেখা হবে।
এমআই/এসএসএইচ