অস্থির পুঁজিবাজারে বড় দরপতন ঠেকাল বিমা খাত
বিনিয়োগকারীদের অস্থিরতার মধ্য দিয়ে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস পার করল দেশের পুঁজিবাজার। বৃহস্পতিবার ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথম ১৫ মিনিটে সূচক কমে যায় ১৪ পয়েন্ট।
এরপর বিমা ও বস্ত্র খাতের পাশাপাশি ওষুধ ও রসায়ন এবং প্রকৌশল খাতের শেয়ারের বিক্রিকে কেন্দ্র করে পৌনে ১২টা পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়। এরপর থেকে ওষুধ ও প্রকৌশল খাতের শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে।
এ দুই খাতের শেয়ার বিক্রির কারণে আবারও সূচকের পতনে লেনদেন হয় দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। তারপর কয়েকটি বড় মূলধনী কোম্পানির পাশাপাশি বিমা ও বস্ত্র খাতের শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দিনের শেষ ঘণ্টা পর্যন্ত লেনদেন হয় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায়।
দিনের শেষে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ১১ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ৩৯ পয়েন্ট। ফলে টানা চার দিন উত্থানের পর বুধবার ও বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে দরপতন হলো।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ছায়েদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা অস্থিরতা ছিল। বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ প্রফিট টেকিং করেছেন, আবার কেউ কেউ সেক্টর পরিবর্তন করেছেন। ফলে মার্কেট কিছুটা ধীর ছিল। আর এটিই পুঁজিবাজারে ঠিক আচরণ। উত্থান হলে পতন হবে। মার্কেট তার সঠিক জায়গায় ফিরে যাবে। এতে বিচলিত হওয়ার কিছু নেই।
ডিএসইতে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ বেশিরভাগ খাতের শেয়ারের দাম কমার দিনে চমক দেখিয়েছে বিমা ও বস্ত্র খাত। বিমা খাতের ৫১টির মধ্যে ৪৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, ৫টির কমেছে। বস্ত্র খাতের ৫৮টির মধ্যে ৩০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, ২২টির কমেছে, অপরিবর্তিত রয়েছে ৬টির।
দিন শেষে ডিএসইতে মোট ৩৭৬টির মধ্যে ১৫৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ১৯১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। মোট ৬৯ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৪২৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। তা থেকে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ২১৮ কোটি ৮৮ লাখ ৯৪ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।
বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১১ দশমিক ২২ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ৭৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ৪ দশমিক ৯২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৩ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ৪২৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৫৫ কোটি টাকার। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে সিমেন্ট খাতের কোম্পানি লাফার্জহোলসিম। এরপর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার। এরপর যথাক্রমে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক, সিটি জেনারেল ইনস্যুরেন্স, ওরিয়ন ফার্মা, বিজিবি পাওয়ার, আল-আরাফাহ ব্যাংক, ম্যাক্সন স্পিনিং ও জেনেক্স ইনফোসেস লিমিটেড।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৯ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ৭০৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১২৪টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। কমেছে ১৭১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৬টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৮৮ কোটি ৯৯ লাখ ২৩ হাজার ৮৮৩ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৯২ কোটি ৪২ লাখ ১ হাজার ২০৯ টাকা।
এমআই/আরএইচ