ব্যাংক-বিমার ছোঁয়ায় উত্থান পুঁজিবাজারে
পতনের একদিন পর সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) সূচকের বড় উত্থানের মধ্য দিয়ে লেনদেন হয়েছে দেশের পুঁজিবাজারে।
এদিন লেনদেনের প্রথম দুই ঘণ্টা সূচক পতন হলেও শেষ দুই ঘণ্টায় ব্যাংক ও বিমা খাতের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে সূচকের বড় উত্থান হয়। এতে সূচকের পাশাপাশি বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। তবে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) প্রভাতী ও নর্দান ইনস্যুরেন্স বাদে বাকি ৪৮টি বিমা কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। একইভাবে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার বাদে বাকি ২৮টি ব্যাংকের শেয়ারের দাম বেড়েছে। আর এ দুই খাতের দাপটে সূচকের বড় উত্থান হয়েছে পুঁজিবাজারে। ফলে টানা দুদিন পর পুঁজিবাজারে উত্থান হলো। এতে বিনিয়োগকারীদের হতাশা ও আতঙ্ক কাটাতে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
এর আগের দুদিন পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। এর মধ্যে বুধবার (২৩ জুন) করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি, কালো টাকা বিনিয়োগের সুবিধা নিয়ে নানা গুজব এবং ব্যাংকগুলোর জুন ক্লোজিংয়ের কারণে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে। এতে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য মতে, এদিন সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল বেশি। ফলে এই সময়ে সূচক পতন হয়েছে। লেনদেনের প্রথম আধা ঘণ্টায় সূচক আগের দিনের চেয়ে ৩৫ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার পয়েন্টে চলে আসে। এরপর সূচক উঠানামার মধ্য দিয়ে বেলা ১২টা পর্যন্ত চলে লেনদেন। তবে বেলা ১২টার পার থেকে ২টা পর্যন্ত লেনদেন হয় সূচকের বড় উত্থানের মধ্য দিয়ে। ফলে দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৫৬ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক বেড়েছে ৮৮ পয়েন্ট।
এদিন ডিএসইতে মোট ৩৭২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১৯১টির, কমেছে ১৫২টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টির। লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৫৯৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ৩০ কোটি ৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে ৪০০ কোটি টাকা।
বৃহস্পতিবার আগের দিনের চেয়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৬ দশমিক ৯৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৯২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক চার দশমিক ৪৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩০১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন বাজারে লেনদেনের শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এরপর বেশি লেনদেন হয়েছে মালেক স্পিনিংয়ের শেয়ারের। এরপর ক্রমান্বয়ে রয়েছে, কুইন সাউথ টেক্সটাইল, কাট্টালী টেক্সটাইল, ডাচ বাংলা ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ম্যাক্সন স্পিনিং, এসকোয়ার নিট, সাইফ পাওয়ার এবং আইএফআইসি ব্যাংক লিমিটেড।
অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৮ পয়েন্ট বেড়ে ১৭ হাজার ৬৫৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১২৪টির, কমেছে ১৪১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৪টির শেয়ারের দাম। সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮৩ কোটি ৫০ লাখ ৩১ হাজার ১৮৯ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১৩৬ কোটি ৩৬ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬৯ টাকা।
এমআই/এসকেডি