কমিশন ব্যবসাবান্ধব রেগুলেটর হিসেবে কাজ করছে
বাজেটে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ রাখা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
তিনি বলেন, এবারের বাজেট ‘মেড ইন বাংলাদেশ বাজেট’। এটি পুঁজিবাজারের জন্যও ইতিবাচক। কমিশন ব্যবসাবান্ধব নিয়ন্ত্রক সংস্থা (রেগুলেটর) হিসেবে কাজ করছে। সরকারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের অবদান বাড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে কমিশন।
শনিবার (১৯ জুন) এক ভার্চুয়াল আলোচনায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) ও বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) যৌথভাবে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি পুঁজির সংস্থান ও শিল্পায়নে। এক্ষেত্রে ব্যবসাবান্ধব রেগুলেটর হিসেবে কাজ করতে চাই। তবে ভালো সুশাসন থাকতে হবে। তিনি বলেন, দেশের বিপুল জনগোষ্ঠীর যে অপ্রদর্শিত অর্থ থাকে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মাধ্যমে সেই অর্থ যেনো বৈধ পথে নিয়ে আসতে পারেন, বাজেটে সেই সুযোগ রাখার জন্য বলেছি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ সামসুদ্দিন আহমেদ, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মো. ইউনুসুর রহমান ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শরীফ আনোয়ার হোসেন ও এসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. হাসান ইমাম, বিএমবিএ'র সভাপতি মো. ছায়েদুর রহমান এবং সিএমজেএফ সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল। সিএমজেএফের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেনের সঞ্চালনায় সমাপনী বক্তব্য রাখেন বিএমবিএ’র সিনিয়রসহ-সভাপতি শুক্লা দাস।
ডিএসইর চেয়ারম্যান ইউনুসুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, প্রতিবছরের বাজেট পুঁজিবাজারের জন্য একটি সুবিধার কথা বলা থাকে। সেটি হলো অপ্রদর্শিত আয় বিনিয়োগের সুযোগ। কিন্তু এ বছর বাজেট পাশের আগে বলা যাবে না এ সুযোগ থাকবে কি না। তাই আগামী বছরেও চলতি বছরের মতো এ সুযোগ অব্যাহত রাখার দাবি জানাই।
সিএমজেএফ সভাপতি হাসান ইমাম রুবেল বলেন, সারা পৃথিবীতে অর্থনীতিতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে পুঁজিবাজার। তাই আমাদের অর্থনীতিকে উন্নত করতে হলে শক্তিশালী পুঁজিবাজারের বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত এবং অতালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হারের ব্যবধান বাড়াতে হবে। পাশাপাশি সরকারি ঋণের বোঝা কমাতে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পকে বাজারে আনতে হবে। যেমন-পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল এসব প্রকল্পের অর্থায়ন পুঁজিবাজার থেকে করতে হবে। এতে আগামী বাজেটে যে দুই লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি রাখা হয়েছে, সে ঘাটতি কিছুটা হলেও পূরণ হবে। অন্যথায় ঘাটতি বাজেট মেটাতে ঋণের বোঝা আরও বাড়বে।
সিএসইর চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহিম তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণের দাবি জানান। এতে তালিকাভুক্ত ও তালিকার বাইরে থাকা কোম্পানির মধ্যে করের ব্যবধান বাড়বে। ভালো কোম্পানিগুলো কর সুবিধা পাওয়ার জন্য পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে।
শরীফ আনোয়ার হোসেন বলেন, ব্রোকার হাউজের লেনদেনে বিদ্যমান অগ্রিম আয় কর নেওয়া যৌক্তিক নয়। উৎসে করের হার দশমিক ০৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ০১৫ শতাংশ নির্ধারণ করার দাবি জানান তিনি। এছাড়া অগ্রিম কর বাবদ যে অতিরিক্ত উৎসে কর নেওয়া হয়েছে, তা বছর শেষে সমন্বয় করা জরুরি।
এএমসি অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট হাসান ইমাম বলেন, ক্যাপিটাল মার্কেটের দিকে আগে নজর দিতে হবে। মিউচ্যুয়াল ফান্ড এবং অন্যান্য বিনিয়োগকে কাজে লাগানোর জন্য সমগোত্রীয় নতুন ফান্ড বাজারে আনতে হবে। আর এসব ফান্ডে প্রথম ৫ বছর করমুক্ত রাখতে হবে।
এমআই/জেডএস