অগ্রিম আয়কর ২০ শতাংশ প্রত্যাহার চান ব্যবসায়ীরা
ব্যবসায়ীদের দাবি ছিল বিদ্যমান ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার করা। কিন্তু প্রস্তাবিত বাজেটে সেই অগ্রিম কর প্রত্যাহার না করে, উল্টো সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ পর্যন্ত আরোপ করা হয়েছে। এটি কার্যকর হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। তাই আসন্ন বাজেটে অগ্রিম আয়কর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার (৫ জুন) মতিঝিলে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ওপর সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি জসিম উদ্দিন।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি নিহাদ কবির, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি রিজওয়ান মাহমুদ, এফবিসিসিআই'র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, আমিন হেলালী, মো. হাবিব উল্যাহ ডন প্রমুখ।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, একটা মার্কেটে ১০০টা দোকান থাকলে মাত্র ১০টা দোকানে ভ্যাট আদায়ের মেশিন দেওয়া হয়, বাকি ৯০টা দোকানে ভ্যাট আদায়ের মেশিন নেই। এমন কেন হচ্ছে, ভ্যাট আদায় করলে সব দোকানে মেশিন দেওয়া দরকার। আর না করলে কারও কাছ থেকে আদায় করার দরকার নেই। এখানে (ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়া) এক টাকা বিনিয়োগ করলে একশ টাকা পাবে, তাহলে কেন এখানে বিনিয়োগ করছে না সরকার। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা ভ্যাট, ট্যাক্স দিতে চায় কিন্তু পদ্ধতিটা সহজ করতে হবে। সরকার এতো বড় বাজেট দিচ্ছে, এতো কিছু করছে। কিন্তু আসল জায়গায় বিনিয়োগ নেই। তাই ভ্যাট আদায় প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগ আরও বাড়ানো উচিত।
কালো টাকার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দেয়া উচিত। এটা সব সময়ের জন্য দেওয়া হলে যারা নিয়মিত ভ্যাট কর দেয় তারা নিরুৎসাহিত হবেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েক দফা মেয়াদ বাড়ানোর পরেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য সরকার ঘোষিত ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ২৮ শতাংশ এখনও বিতরণ হয়নি। বাকি অংশ বিতরণ ও নতুন আরেকটা প্যাকেজ ঘোষণার অনুরোধ করছি। এছাড়া মূল্য সংযোজন কর আইন সহজ করতে অর্থমন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং এফবিসিসিআইয়ের সমন্বয় টাস্কফোর্স গঠনের আহ্বান জানান জসিম উদ্দিন।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ আয়কর প্রত্যাহারের পাশাপাশি ড্রেজার ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ করার অনুরোধ করছি। এ শুল্ক গত বছর থেকে ৩১ শতাংশ করা হয়েছে। তার আগে ১ শতাংশই ছিল।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ এ নেতা বলেন, ব্যক্তি আয়কর দাতাদের ন্যূনতম কর হার শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ কর ন্যূনতম শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি। পাশাপাশি এসএমইখাতে নারী উদ্যোক্তাদের বার্ষিক টার্নওভার ৭০ লাখ টাকা করা হয়েছে। এটা এক কোটি টাকা করার দাবি জানান।
এসআই/জেডএস