বিএসইসির পরিস্থিতি দ্রুত সমাধানে সরকারের হস্তক্ষেপ চায় ডিবিএ

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অভ্যন্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে সৃষ্ট ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে পুঁজিবাজারের স্টক ব্রোকারদের সংগঠন ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিবিএ)। পুঁজিবাজারের বৃহৎ স্বার্থে এই ঘটনার দ্রুত সমাধান চেয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে সংগঠনটি।
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ডিবিএ’র পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম বলেন, যেখানে দীর্ঘ বছর ধরে দেশ বিদেশের নানান নেতিবাচক ঘটনা ও সিদ্ধান্তের ফলে দেশের পুঁজিবাজার ক্রান্তিকাল পার করছে। লাখ লাখ বিনিয়োগকারী পুঁজি হারিয়ে নি:স্ব হয়ে গেছে, বাজার মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। সেখানে নিয়ন্ত্রক সংস্থার ন্যায় অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কর্মকর্তাদের মাঝে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলার ঘটনা বাজারের জন্য মোটেও সুখকর নয়। এই ঘটনা বিনিয়োগকারীসহ বাজার সংশ্লিষ্ট সকলের মাঝে গভীর উদ্বেগ ও হতাশার সৃষ্টি করেছে। কমিশনের অভ্যন্তরে চলমান ঘটনার দ্রুত সমাধান না হলে বাজারে বিদ্যমান আস্থার সংকট আরও প্রকট হতে পারে এবং দেশি বিদেশি বিনিয়োগকারী বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে।
আরও পড়ুন
তিনি আশঙ্কা করে বলেন, কমিশনের অভ্যন্তরে সৃষ্ট এই ঘটনা বাজারে নৈরাজ্য ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে বাজারে বিনিয়োগের পরিবেশ নষ্ট করবে এবং সামগ্রিকভাবে বাজারকে অস্থিতিশীল করে দেবে। তাই বাজারের জন্য ক্ষতিকর কমিশনের অভ্যন্তরে চলমান বিশৃঙ্খলা দ্রুত বন্ধ হওয়া দরকার। বাজারের বৃহত্তর স্বার্থে কমিশনে সৃষ্ট পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে আমরা এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এবং এ বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ দাবি করছি।
এর আগে বুধবার বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগ দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আগারগাঁও বিএসইসির ভবনে চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কমিশনারদের প্রায় চার ঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ করে রাখেন তারা। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রতিবাদে কর্মীরা চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করা হয়।
এ বিষয় বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ গণমাধ্যমে জানান, বিগত দিনের পুঁজিবাজার এর বিভিন্ন অনিয়ম অনুসন্ধানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ১২টি লিস্টেড কোম্পানি এর বিভিন্ন অনিয়ম তদন্ত করে।
এ পর্যন্ত তদন্তকমিটি ৭টি তদন্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছে। এই রিপোর্ট এর ভিত্তিতে অভিযোগ গঠনের প্রক্রিয়া চলমান যার আওতায় রয়েছে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং বিএসইসির কিছু কর্মকর্তা।
এসব ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা বিএসইসি এর চেয়ারম্যান এবং কমিশনারদের কমিশন এর বোর্ড রুম এর চলমান সভায় জোরপূর্বক ঢুকে অবরুদ্ধ করে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী বিএসইসিতে অবস্থান নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বর্তমান কমিশন পুঁজিবাজারের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় বিএসইসি এর কিছু উচ্ছৃঙ্খল কর্মকর্তা ও কর্মচারী এরূপ অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি করেছে বলে প্রতীয়মান হয় এমন দাবি করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
এসআই/এমএসএ