এস আলমের ছেলেসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নীতি লঙ্ঘন করে ভুয়া ডকুমেন্ট তৈরি করে ৮২৭ কোটি ৪২ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের মালিকের সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম এবং সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্টসের মালিক আরিফুল ইসলাম চৌধুরীসহ ৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাত বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আরও পড়ুন
মামলায় ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ করপোরেট শাখা থেকে ৮২৭ কোটি ৪২ লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। যা সুদসহ ৯১৮ কোটি ৫৭ লাখ ৫৪ হাজার ৭১৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আত্মসাৎ ও অর্থের প্রকৃত উৎস গোপন ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয়।
দুদক দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৭৮/৪৭১/৪৭৭ক/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন- ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির সাবেক চেয়ারম্যান এবং পরিচালক আহসানুল আলম, সেঞ্চুরি ফুড প্রোডাক্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরিফুল ইসলাম চৌধুরী, সদস্য মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান, ব্যাংকটির সাবেক পরিচালক ও ইসি কমিটির চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, সাবেক নমিনি পরিচালক সৈয়দ আবু আসাদ, ইসি কমিটির সাবেক সদস্য ও ভাইস চেয়ারম্যান ডা. তানভীর আহমদ, ইসি কমিটির সাবেক সদস্য ও পরিচালক মো. কামরুল হাসান, সাবেক স্বতন্ত্র পরিচালক ও ইসি কমিটির সদস্য ড. মোহাম্মাদ সালেহ জহুর, সাবেক পরিচালক প্রফেসর মো. নাজমুল হাসান, ড. মো. ফসিউল আলম, আবু সাইদ মোহাম্মদ কাশেম, জামাল মোস্তফা চৌধুরী, ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মাওলা, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহবুব উল আলম, সাবেক ডিএমডি তাহের আহমেদ চৌধুরী, হাসনে আলম, মো. আব্দুল জব্বার, এসইভিপি মো. সিদ্দিকুর রহমান, এএমডি এ.এ.এম হাবিবুর রহমান, মোহাম্মদ সাঈদ উল্লাহ ও মো. ওমর ফারুক খান।
অন্যান্য কর্মকর্তাদের মধ্যে অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জে, কিউ, এম হাবিবুল্লাহ ও মুহাম্মদ কায়সার আলী, সাবেক ডিএমডি (সিআরও) মোহাম্মদ আলী, মো. মোস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী ও মোহাম্মদ সাব্বির, সাবেক ডিএমডি আবুল ফাইয়াজ, মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, মিফতাহ উদ্দিন, মো. রফিকুল ইসলাম ও কাজী মো. রেজাউল করিম, বর্তমান এএমডি মো. আলতাফ হোসেন, এসইভিপি জি. এম. মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন কাদের, সাবেক এসইভিপি মোহাম্মদ উল্লাহ,এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. ফরিদ উদ্দিন, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট খালেদ মাহমুদ রায়হান, ভিপি মোহাম্মদ ইহসানুল ইসলাম।
ব্যাংকটির অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও শাখা প্রধান মো. মনজুর হাসান, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক শাখা প্রধান মুহাম্মদ সিরাজুল কবির, এসএভিপি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী, দুলারি এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. ছাদেকুর রহমান, মুছা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. মুছা চৌধুরী, এমএম কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ রফিক, অ্যাপার্চার ট্রেডিং হাউজের স্বত্বাধিকারী এস. এম নেছার উল্লাহ, ফেমাস ট্রেডিং কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী আরশাদুর রহমান চৌধুরী, গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাশেদুল আলম, গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মাদ আব্দুস সবুর, আনছার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আনছারুল আলম চৌধুরী, রেইনবো কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী রায়হান মাহমুদ চৌধুরী, কোস্টলাইন ট্রেডিং হাউজের স্বত্বাধিকারী এরশাদ উদ্দিন, গ্রিন এক্সপোজ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী এম এ মোনায়েম, ইউনাইটেড সুপার ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মো. গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী ও সোনালী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী সহিদুল আলম।
দুদক থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ১৯ ডিসেম্বর ইসলামী ব্যাংকের চট্টগ্রামের চাকতাই শাখা থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা লুটপাটে আহসানুল আলমসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে এবং চট্টগ্রামের জুবিলী রোড শাখা থেকে প্রায় এক হাজার ১১৪ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগে গত ৯ জানুয়ারি এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও আশরাফুল আলম এবং ইসলামী ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ৫৪ জনের পৃথক দুই মামলা করে দুদক। এই অংশের অনুসন্ধান কাজের নেতৃত্ব দেন দুদকের উপপরিচালক ইয়াছির আরাফাতের নেতৃত্বে তিন সদস্যের টিম। টিমের অপর সদস্যরা হলেন- উপপরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী পরিচালক রণজিৎ কুমার কর্মকার। এ ছাড়া দুদকের পৃথক আরও দুই টিম অনুসন্ধান কাজ পরিচালনা করছে।
আরএম/এমজে