শীতের সবজিতে স্বস্তি মিললেও মাছ-মাংসে অস্বস্তি
খুলনায় শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে, কমেছে দাম। শীতের শুরুতে দাম চড়া থাকলেও এখন ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই রয়েছে সবজির দাম। সবজিতে স্বস্তি মিললেও অস্বস্তি রয়েছে মাছ ও মাংসের বাজারে। ফলে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের মাছ-মাংস কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন নগরীর খালিশপুর, নতুন বাজার, গল্লামারি, মিস্ত্রিপাড়া, জোড়াকল বাজার, ময়লাপোতা, নিরালা ও বয়রা বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯৫০-১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির দামও। ১৬০-১৭০ টাকা কেজির ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ১৯০-২০০ টাকা। এছাড়া সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০ টাকা, দেশি-৫০০ টাকা, লেয়ার ২৫০-২৬০ টাকা, কক ২৮০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে পাঙ্গাস মাছ ১৩০-১৪০ টাকা, ফাইসা ২৬০-৩০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২০০ টাকা, গ্লাস কার্প ১৬০-১৮০ টাকা, রুই ২০০-২৪০ টাকা, কাতলা ২২০-৩০০ টাকা, টেংরা ৪০০-৫০০ টাকা, ইলিশ ছোট ৪৫০-৬৫০ টাকা, চাষের কৈ ১৮০-২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
তবে স্বস্তি রয়েছে সবজির বাজারে। সরবরাহ বাড়ার কারণে কমেছে শীতকালীন সবজির দাম। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা, শালগম ১৫-২০ টাকা, মূলা ২০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, নতুন আলু ৩০-৩৫ টাকা, পেঁয়াজকালী ৩০ টাকা কেজি, টমেটো ৪০-৫০ টাকা আর কাঁচা মরিচের কেজি ৪০ টাকা।
মীম নামের এক গৃহিণী বলেন, শীতের সবজির দাম কম। আগে যেখানে ৫০০ টাকায় বাজারের ব্যাগ ভর্তি করা যেত না, সেখানে এখন ২০০ টাকার সবজি কিনলে আরও ব্যাগ ভরে যায়। তবে মাছ ও মাংসের দাম বেশি।
রিকশাচালক আলমগীর হোসেন বলেন, মাছ-মাংস কেনার মতো না। আর ব্রয়লার মুরগি যে কিনবো তাও একটা ২ কেজির বেশি হয়। দাম ৪০০/৪৫০ টাকা লাগে। ছেলে-মেয়েদের ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে পারি না। যা আয় করি তা বাজারেই চলে যায়। পরিবারের অন্যান্য খরচ কীভাবে মেটাবো।
নতুন বাজারে আসা ক্রেতা ইমাম হোসেন বলেন, গরু-খাসির দাম বেশি। ব্রয়লার খাব, তার দামও বেড়েছে।
খালিশপুর পৌর সুপার মার্কেটে গরুর মাংস কিনতে আসা আশরাফুল বলেন, ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও ৭০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে মাংসের দাম।
নগরীর জোরাকল বাজারের গরুর মাংস বিক্রেতা মো. তানজীল আলম বলেন, মাংসের দাম কম থাকলে আমাদের একটু বেশি কেনা-বেচা হয়। আর বাড়তি হলে আমাদের বেচাকেনা কমে যায়। ১ কেজির জায়গাতে আধা কেজি কেনে তখন।
মাছবিক্রেতা শহীদ বলেন, খুলনায় মাছের সরবরাহ বেশি হলে দাম কমবে। মাছের সরবরাহ কম, তাই দাম একটু বেশি।
মুরগি বিক্রেতা শহীদুল হাওলাদার বলেন, মুরগির খাবারের দাম বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে। আর দাম কমার লক্ষণ দেখছি না। আমরা যেমন কিনি, তেমন বিক্রি করি।
খালিশপুর বাজারের মুরগি বিক্রেতা লিটন বলেন, কিছুদিন আগেও ব্রয়লার মুরগি ১৬০-১৭০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। তখন কিনেছি কিছুটা কমে। তবে বর্তমানে মুরগি বাজারে কম আসছে আর দামও বেশি। তাই এখন ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করতে হচ্ছে।
মোহাম্মদ মিলন/এমএন