অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম
বাজারে প্রচলিত নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে বলে মনে করছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। বাজারে নিত্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করা ও বাজার মনিটরিং বাড়ানোসহ মোট ৮ দফা দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ক্যাব কর্তৃক ‘আলু, পেয়াঁজ ও ভোজ্য তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে’ আয়োজিত মানববন্ধনে এসব দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে। বিশেষত আলু, পেঁয়াজ এবং খোলা সয়াবিন তেলের দাম অতিরিক্ত বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস অবস্থা। বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি আলু মান ভেদে এখনো ৭৫-৮০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১১৫-১৩০ টাকা এবং খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬৫-১৬৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন
বাজার বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে তারা বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নভেম্বর মাসে এমন চড়া দামে আলু বিক্রি হতে দেখা যায়নি। মূলত সিন্ডিকেটের কারণেই এবার আলুর দামের এমন অবস্থা। বিপুল আলু হিমাগারে মজুদ থাকায় ও আমদানি জটিলতার কারণে এবার আলুর দাম ভোগাচ্ছে ক্রেতাদের। অবশ্য দাম নিয়ন্ত্রণে বা আলুর সরবরাহ স্বাভাবিক করতে নেই যথাযথ তদারকি। হিমাগার পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর তদারকি না থাকায় আলুর দাম কমানো সম্ভব হচ্ছে না। একইসঙ্গে আলুর মতো নিয়ন্ত্রণে আসেনি পেঁয়াজের দাম। দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি থাকা পেঁয়াজের দামও এখনও কেজি প্রতি ৭০-৮০ টাকা।
মানবন্ধনে উপস্থিত ক্যাব নেতারা বলেন, কৃষক পর্যায় থেকে নামমাত্র মূল্যে আলু কিনে মজুদ করে অতিরিক্ত মুনাফা লুটছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘদিন থেকে এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এসব ঘটনা বারবার ঘটছে। এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণের জন্য সরকারি সংস্থাগুলোকে আরও বেশি সজাগ ও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগী হতে হবে।
এসময় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে ৮ দফা দাবি তুলে ধরেন তারা৷ সেগুলো হচ্ছে —
১. অসাধু দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
২. নিত্য পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।
৩. টিসিবির ট্রাক সেল বাড়াতে হবে।
৪. ভোজ্য তেল খোলা বাজারে যারা বিক্রি করছেন তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
৫. ভোক্তা স্বার্থ দেখার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে আলাদা বিভাগ বা কনজুমারস মন্ত্রণালয় গঠন করতে হবে।
৬. সরকার ১ কোটি পরিবারকে কার্ডের মাধ্যমে নিত্যপণ্য দিচ্ছে এর সংখ্যা দেড় কোটি করতে হবে।
৭. বাজারে খোলা ভোজ্য তেল বিক্রেতাদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৮. বাজার অভিযান বা মনিটরিং বাড়াতে হবে।
মানবন্ধনে এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মো. শওকত আলী খান।
আরএইচটি/এমএসএ