অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা না এলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ব্যাহত হবে
জাতীয় শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, অর্থনীতিতে যদি স্থিতিশীলতা বা স্বস্তি না আসে তাহলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার বা নির্বাচন ব্যবস্থার দিকে এগোনোর গতি ব্যাহত হবে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) রাজধানীর ইস্কাটনের বিস্ মিলনায়নতনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত 'ডায়ালগ ফর ডেমোক্রেটিক রিকনষ্ট্রাকশন' শীর্ষক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সংস্কার বা স্থিতাবস্থা না থাকলে, সেখানে যদি স্বস্তি না আসে— তবে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার, বা নির্বাচনী ব্যবস্থার দিকে এগোনোর যে গতি এই দুটিই কোন না কোনোভাবে প্রভাবিত হবে। কেউ যদি মনে করে, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক ও নির্বাচনী সংস্কারের পথে এগোব, কিন্তু অর্থনৈতিক বিষয়গুলো তার মতই (বর্তমান ভঙ্গুর দশায়) চলবে তাহলে আমরা বিভ্রান্ত হচ্ছি।
আরও পড়ুন
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি শেষ বিচারে নির্ধারণ করে দিবে কী গতিতে এবং কী পরিধি নিয়ে— আমরা প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার করতে পারব, এবং কত দ্রুত বা কত দেরিতে নির্বাচনী ব্যবস্থার দিকে পৌঁছাতে পারব।
দেবপ্রিয় বলেন, যারা দায়িত্বে আছেন (সরকারে), তাদের এখন বুঝতে হবে কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের নজর দেয়াটা জরুরি। প্রকৃত মজুরি রক্ষা করতে হবে, কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য দিতে হবে, সামাজিক সুরক্ষাগুলো রক্ষা করতে হবে। ছাত্রদের আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিতে হবে, স্বাস্থ্যসেবাগুলো যাতে ঠিকমতো চলে সেটা দেখতে হবে। আইনশৃঙ্খলার মাধ্যমে সকলকে সুরক্ষা দিতে হবে।
তিনি বলেন, একইভাবে দেশের ভেতরে নিশ্চয়তা, স্বস্তির মনোভাব তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থনীতির ক্ষেত্রে যারা দায়িত্ববান আছেন তাদের নীতিমালাকে স্পষ্ট করতে হবে, তাদের কর্মসূচিকে স্পষ্ট করতে হবে। সেটা সংশোধিত বাজেট প্রণয়ন বা আগামী বাজেট প্রণয়নের মধ্য দিয়েও হতে পারে। শুধু স্পষ্ট করলেই হবে না। সমন্বয়হীনতা দূর করে দ্রুততার সাথে, দক্ষতার সাথে এবং জবাবদিহির মাধ্যমে এটাকে বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এখন প্রায়শই শোনা যাচ্ছে এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে, একে বাজার থেকে তুলে দিতে হবে, একে বিভিন্ন ধরনের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যদি ব্যক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ দেয়া হয় রাজনৈতিক চিন্তা করে- তার একটি অর্থনৈতিক তাৎপর্য আছে। একটি ব্যক্তির রাজনৈতিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হলে – তার অর্থনীতিতে অংশগ্রহণের অধিকারও ক্ষুণ্ন হয়। তাই এটা বিবেচনা করতে হবে। ব্যক্তি গোষ্ঠী বা দল তাদের ওপর যখন আমরা রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণের কথা বলি– এটার অর্থনৈতিক তাৎপর্য আছে। তার আগামী দিনের সঞ্চয়, বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার ওপরও আমরা এক ধরনের নিয়ন্ত্রণ আরোপ করছি।
এটা একটা নতুন পরিস্থিতি, নতুন সুযোগ। এখানে অনেক সংস্কারের দরকার। তার মানে এই না অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একাই সব করে দিয়ে যাবে, তাহলে আমরা ভ্রান্ত জগতে বসবাস করি। তাহলে বিল্পব করাটাই ভুল হয়েছে। এখানে সবাইকেই যার যার দায়িত্ব পালন করতে হবে।
এমএসএ