ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগে অতিরিক্ত কমিশনারসহ ৩ কর কর্মকর্তা বরখাস্ত
ঘুষ নেওয়া ও দুর্নীতি করার অভিযোগে অতিরিক্ত কর কমিশনারসহ তিন আয়কর কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) তাদের বরখাস্ত করে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব এবং এনবিআর চেয়ারম্যান প্রজ্ঞাপনে সই করেন।
এই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে করদাতা থেকে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। তিন কর্মকর্তাই চট্টগ্রামে কর্মরত থাকার সময় ঘুষ গ্রহণ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
কর্মকর্তারা হলেন- চট্টগ্রাম কর আপিল অঞ্চলের অতিরিক্ত কর কমিশনার সাইফুল আলম। এর আগে তিনি কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামের যুগ্ম কর কমিশনার ছিলেন।
আরও পড়ুন
কর অঞ্চল-১৪, ঢাকার যুগ্ম কর কমিশনার এ কে এম শামসুজ্জামান। এর আগে তিনি কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামের যুগ্ম কর কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
কর অঞ্চল-২, চট্টগ্রাম এর সহকারী কর কমিশনার মো. আমিনুল ইসলাম। এর আগে তিনি কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (ইএসিটি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর একই অভিযোগে কর কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তিনি চট্টগ্রাম কর আপিলাত ট্রাইবুন্যাল, দ্বৈত বেঞ্চের সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর কমিশনারকে বরখাস্তের ২৮ দিন পর কর অঞ্চল-১, চট্টগ্রামের সাবেক তিন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করা হলো।
তিনটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯(১) ধারা মোতাবেক সরকারি চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। সাময়িক বরখাস্তকালীন তারা বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন। উল্লেখ্য, ধারা ৩৯(১) সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘কোনো কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের প্রস্তাব বা বিভাগীয় কার্যধারা রুজু করা হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগের মাত্রা ও প্রকৃতি, অভিযুক্ত কর্মচারীকে তাহার দায়িত্ব হইতে বিরত রাখিবার আবশ্যকতা, তৎকর্তৃক তদন্তকে প্রভাব বিস্তারের আশঙ্কা, ইত্যাদি বিবেচনা করিয়া তাহাকে সাময়িক বরখাস্ত করিতে পারিবে।’
এনবিআর সূত্রে জানা যায়, এই তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে। প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
অপরদিকে, মো. শফিকুল ইসলাম আকন্দ ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম কর আপিল থেকে কর অঞ্চল-৭, ঢাকায় বদলি করা হয়। বদলি আদেশ জারির একদিন পর ১৯ সেপ্টেম্বর তাকে বরখাস্ত করা হয়। গত ২ সেপ্টেম্বর নিজ কার্যালয়ে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এনবিআরের একাধিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের কর আপিলের সদস্য থাকায় অবস্থায় এক করদাতা তার বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ করেন। বিষয়টি এনবিআরকে খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা নিশ্চিত হওয়ায় তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নতুন কর অঞ্চলে বদলির একদিন পরই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এর আগে করদাতাদের হয়রানির কারণে রাজশাহী থেকে খুলনায় বদলি করা হয়। সর্বশেষ তাকে চট্টগ্রাম আপিলে বদলি করা হয়। তিনি বিসিএস ১৩ ব্যাচের আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা।
আরএম/এমএ