পণ্যবাহী গাড়ির নিরাপত্তা চান ব্যবসায়ীরা
সেনাবাহিনীর কাছে সড়ক ও মহাসড়কে রপ্তানিসহ সব শিল্পপণ্যবাহী গাড়ির নিরাপত্তা চেয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
রোববার (১১ আগস্ট) উত্তরার তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর কার্যালয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসির সঙ্গে এক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা নিজেদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে এ দাবি জানান।
তারা চট্টগ্রাম বন্দরে দ্রুততম সময়ে পণ্য উঠানো–নামানো ও ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দরে পণ্য খালাসে ব্যবস্থা নিতে সেনাবাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানান।
তারা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য ওঠানামায় অহেতুক সময়ক্ষেপণ করা হয়। এতে শিল্পের প্রতিযোগী সক্ষমতা কমছে। ঢাকা বিমানবন্দরেও পণ্য খালাসে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে।
আরও পড়ুন
বিজিএমইএ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বৈঠকে ব্যবসায়ীদের নেতৃত্ব দেন বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম। নবম পদাতিক ডিভিশনের নেতৃত্ব দেন এর জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।
বিজিএমইএর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় আজকের (গতকাল) মধ্যে গাজীপুর এলাকার ৯৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ কারখানা; সাভার-আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের ৯৯ দশমিক ৫১ শতাংশ; চট্টগ্রাম, নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা মহানগরের শতভাগ তৈরি পোশাক কারখানা খুলেছে।
মেজর জেনারেল মো. মঈন খান বলেন, এই মুহূর্তে সেনাবাহিনীর অগ্রাধিকার হচ্ছে, অর্থনীতির মেরুদণ্ড হিসেবে শিল্প যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে, তা নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে টাস্কফোর্স গঠনের মাধ্যমে শিল্পকারখানায় কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। কুইক রিঅ্যাকশন ফোর্সের মাধ্যমে দ্রুত ঘটনাস্থলে টিম পৌঁছে যাচ্ছে। চাহিদা অনুযায়ী সহযোগিতা প্রদান করছে। যে কারণে সাভার ও আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অভিযোগের সংখ্যা প্রথম দিনের তুলনায় দ্বিতীয় দিনে কমেছে।
ঝুট ব্যবসার একক নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে যেসব সন্ত্রাসী মাঠে তৎপর রয়েছে, তাদের বৃত্তান্ত দেওয়ার জন্য বিজিএমইএর নেতাদের আহ্বান জানান নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।
তিনি বলেন, আর একটিও কারখানা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তা দেখবে শিল্প পুলিশ। চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে পণ্য উঠানো–নামানো দ্রুততর করার জন্য তিনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানান।
বৈঠকে ঝুট ব্যবসায়ীদের হাত থেকে পোশাকশিল্পকে মুক্ত করতে সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চান ব্যবসায়ীরা। তারা বলেন, পোশাকশিল্প–অধ্যুষিত শিল্পাঞ্চলে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসের ঘটনা ঘটছে। এ খাতে আধিপত্য বিস্তার করতে গড়ে উঠেছে একাধিক সন্ত্রাসী দল। তারা কিশোর গ্যাং তৈরি করে এলাকার পরিবেশ অশান্ত রাখছে। এমনকি মালিক–শ্রমিকদেরও বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে। পোশাকশিল্প তাদের হাতে জিম্মি।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মাহবুবুল আলম, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফআইসিসিআই) সভাপতি জাভেদ আখতার, বস্ত্রকল মালিকদের সংগঠন বিটিএমএর সহসভাপতি মো. ফজলুল হক, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন, বিজিএমইএর সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মো. নাসির উদ্দিন, আব্দুল্লাহ হিল রাকিব, রকিবুল আলম চৌধুরী প্রমুখ।
এএসএস/এমএসএ