অব্যাহত রয়েছে শেয়ারবাজারের উত্থান
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর দেশের শেয়ারবাজারের উত্থান অব্যাহত রয়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেড়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৩০০ পয়েন্টের উপরে।
প্রধান মূল্যসূচক ইতিহাস সৃষ্টির দিনে ডিএসইতে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে। সেই সঙ্গে লেনদেনেও বড় উত্থান হয়েছে। ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারির পর বাজারটিতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে বাজারটিতে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া তিন কার্যদিবসেই সূচকের উল্লম্ফন হলো।
কোটা সংস্কার আন্দোলনসহ নানা কারণে প্রায় চার মাস ধরে শেয়ারবাজার পতনের মধ্যে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক প্রায় ১০০ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় দাপট দেখিয়েছে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। লেনদেনের প্রায় সময়জুড়ে দিনের সর্বোচ্চ দামে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের বিপুল ক্রয়াদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয়াদেশের ঘর। এ ১৩১ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আরও শতাধিক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখায়। সবমিলিয়ে ২৬৭ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ৫ শতাংশের ওপরে বেড়েছে।
এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩৫৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৭টি প্রতিষ্ঠানের। আর সাতটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৩০৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৯২৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক রেকর্ড সৃষ্টির দিনে অপর দুই সূচকেরও বড় উত্থান হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২৭৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১১০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৩২ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭৭৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৮৩০ কোটি ৯২ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে সিটি ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৬৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর ৬২ কোটি ১৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৫৫ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে টেকনো ড্রাগস।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, ওরিয়ন ফার্মা, মিউচুয়াল ট্রান্স ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৬১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৮৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৪৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩১টির এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২২৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
এসকেডি