ক্যাশ টাকা ছাড়াই হাটে ৯৪ কোটি টাকার পশু কেনাবেচা
কোরবানির পশুর হাট মানেই অনেক মানুষের ভিড়। চলে ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁক-ডাক, দর কষাকষি। এমন পরিবেশে নগদ অর্থ বহনে থাকে ঝুঁকি। এর মধ্যে রয়েছে ছেঁড়া-ফাটা নোট সংক্রান্ত সমস্যাসহ নকল টাকার ঝক্কিঝামেলা। থাকে ছিনতাই, মলম পার্টির খপ্পরে পড়ার ভয়। সব সমস্যার কথা মাথায় রেখে এবারও কোরবানির পশুর হাটে ছিল ক্যাশলেস ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে পশু কেনাবেচার সুবিধা। যার সুফল নিয়েছেন অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা। ফলে গেল ঈদুল আজহায় ক্যাশলেস অর্থাৎ নগদ টাকা ছাড়াই প্রায় ৯৪ কোটি টাকার কোরবানির পশু কেনাবেচা হয়েছে।
খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, কোরবানির পশুর হাটকে কেন্দ্র করে প্রচুর টাকার লেনদেন হয়। ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে কোরবানির পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেনের ব্যবস্থা করা হয়। ২০২২ সালে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের কোরবানির হাটে পাইলট কার্যক্রমে প্রায় ৩৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। সফলভাবে এই পাইলট কার্যক্রম পরিচালনার পরিপ্রেক্ষিতে 'ক্যাশলেস বাংলাদেশ' প্রকল্পের আওতায় ২০২৩ সালেও কোরবানির পশুর হাটে কার্যক্রম পরিচালিত হয় এবং ৪৪ কোটি টাকার লেনদেন হয়।
এর ধারাবাহিকতায় এবারও ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, নাটোরের সিংড়া পৌরসভাসহ মোট ১০টি হাটে ক্যাশলেস ডিজিটাল লেনদেনের সেবা দিয়েছে দেশের নয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংক ও দুটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ঈদুল আজহায় নগদ টাকা ছাড়াই পশুর হাটে ৯৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।
আরও পড়ুন
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক এবার হাটে ক্যাশলেস ডিজিটাল লেনদেনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছিল ৭০ কোটি টাকা। সেখানে ৯৪ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। তার মানে ক্রমেই পশুর হাটে ডিজিটাল লেনদেন জনপ্রিয় হচ্ছে। ভবিষ্যতে লেনদেন আরও বাড়বে বলে ধারণা ব্যাংকারদের।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এ বছর ১০টি হাটে একটি করে ডিজিটাল বুথ ছিল। সেখানে এটিএম মেশিন, বাংলা কিউআর কোড, পয়েন্ট অব সেলস (পিওএস) যন্ত্র ও মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের (এমএফএস) মাধ্যমে ক্রেতারা পশু বিক্রির টাকা পরিশোধের সুবিধা পান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে প্রাপ্ত তথ্য বলছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভাটারা সুতিভোলা পশুর হাট ও উত্তরা দিয়াবাড়ি পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন পরিচালনার দায়িত্বে ছিল ব্যাংক এশিয়া ও ব্র্যাক ব্যাংক। মোহাম্মদপুর বসিলা ও গাবতলী পশুর হাটে এই দায়িত্বে ছিল সিটি ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক। পাশাপাশি নগদ ও বিকাশ এসব হাটে তাদের বুথ বসায়। আর মিরপুর ইস্টার্ন হাউজিংয়ে এবি ব্যাংক ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশের পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেনের দায়িত্বে ছিল আইএফআইসি ব্যাংক ও পিওএস সরবরাহ করে পূবালী ব্যাংক।
অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের হাজারীবাগ বাজারের দায়িত্বে ছিল পূবালী ব্যাংক ও বিকাশ, সাগরিকা হাটে ইসলামী ব্যাংক ও নগদ, নূর নগর হাটে ইউসিবি ব্যাংক ও নগদ, নাটোরের সিংড়া পৌরসভার পশুর হাটে ক্যাশলেস লেনদেন বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক ও নগদকে।
এসআই/এমজে