বিদ্যুতের ভর্তুকি দিতে ৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার বিশেষ বন্ড
বিদ্যুতের মূল্য বাবদ সরকারের কাছে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের মালিকদের পাওনা ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি, টাকার অংকে যার পরিমাণ প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। সরকার অর্থ সংকটে থাকায় এ পাওনা দিতে পারছে না। এতে করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ব্যাংকের কাছ থেকে নেওয়া অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না। ফলে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ বা খেলাপি হয়ে গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর ঋণের বিপরীতে ১২ হাজার কোটি টাকার বন্ড ইস্যু করা হবে। ইতোমধ্যে ৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুতে সম্মত হয়েছে ২৪ ব্যাংক। অর্থ মন্ত্রণালয়ে এ সংক্রান্ত একটি এমওইউ চুক্তি সই হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।
সূত্র বলছে, বিদ্যুৎ খাতের ভর্তুকির বিপরীতে ৫ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকার বন্ড ইস্যুতে সম্মত হয়েছে ২৪টি ব্যাংক। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) এমওইউ স্বাক্ষরও সম্পন্ন করেছে এসব ব্যাংক। এ সপ্তাহে বন্ড ইস্যুর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেওয়া হতে পারে। এরপর আগামী ৩-৪ কর্মদিবসের মধ্যে এই বন্ড ইস্যু করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বন্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে অর্থায়নকারী ব্যাংকগুলোর অনুকূলে বিদ্যুৎ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণের বিপরীতে প্রথমে বিশেষ ট্রেজারি বন্ড ইস্যু করবে। ব্যাংকগুলো সেই বন্ড কিনে নেবে। ব্যাংকের কাছ থেকে বন্ড কেনা বাবদ সরকার যে টাকা পাবে, সেটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে পরিশোধ করে দেবে। তখন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো সে অর্থ আবার ব্যাংকগুলোকে পরিশোধ করে দেবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণগুলো খেলাপি হওয়ার হাত থেকে বেচে যাবে এবং এর বিপরীতে সঞ্চিতি সংরক্ষণ করতে হবে না। পাশাপাশি ব্যাংকগুলো বন্ডের অর্থের সমপরিমাণ বিধিবদ্ধ জমার (এসএলআর) বাধ্যবাধকতাও পূরণে ব্যবহার করতে পারবে। এছাড়া ব্যাংকগুলো এ বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে জমা রেখে রেপোর মাধ্যমে তারল্য সুবিধাও নিতে পারবে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বকেয়া বিলের পুরো অর্থ না পেলে বন্ডের সমপরিমাণ অর্থ ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যয় করতে পারবে এবং এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় কমে আসবে ও খেলাপি হওয়ার হাত থেকে রেহাই পাবে।
এসআই/এসএম