সোনালী ব্যাংকের মুনাফা খাচ্ছে খেলাপিরা
সদ্য সমাপ্ত ২০২৩ সালে তিন হাজার ৭২৭ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক। কিন্তু ব্যাংকের পরিচালন ব্যয়, ঋণের বিপরীতে প্রভিশন এবং সরকারি ট্যাক্স হিসাব করা হয়নি। খরচ বাদ দিয়ে মূলত নিট মুনাফা হিসাব করা হয়। খরচ বাদ দিলে ব্যাংকের নেট বা প্রকৃত মুনাফা কিছুই থাকবে না। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে তিন হাজার ৭০০ কোটি টাকার ডেফারেল বা প্রভিশন রাখতে অতিরিক্ত সময় নিয়েছে ব্যাংকটি। অর্থাৎ খেলাপি ঋণের বিপরীতে এসব প্রভিশন রাখার পর নিট মুনাফার বিপরীতে লোকসানে পড়বে রাষ্ট্রায়ত্ত এ ব্যাংকটি।
সোমবার (১ জানুয়ারি) সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফজাল করিম।
সোনালী ব্যাংক থেকে সরবরাহকৃত বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা যায়, ২০২৩ সালে ১ লাখ ৫০ হাজার ৭৩২ কোটি টাকার আমানত সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ৮০৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করা করেছে ব্যাংকটি। হিসাব অনুযায়ী অ্যাডভান্স ডিপোজিট রেশিও (এডিআর) দাঁড়ায় ৬৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ, যা আগের যেকোনো বছরের তুলনায় অনেক বেশি।
সদ্য সমাপ্ত বছরে সোনালী ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা হয়েছে তিন হাজার ৭২৭ কোটি টাকা, যা আগের একই বছরের তুলনায় এক হাজার ৩৪৫ কোটি টাকা বেশি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে বর্তমান খেলাপি ঋণের পরিমাণ জানাতে পারেননি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তবে পূর্বের খেলাপি থেকে এই বছরে ৫৬৭ কোটি টাকা নগদ আদায় সম্ভব হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি। ব্যাংকের লোকসানি শাখার সংখ্যা ১৭ থেকে নয়টিতে নেমে এসেছে। ভবিষ্যতে এর সংখ্যা আরও কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ৯৯২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, যা বিতরণ করা মোট ঋণের ১৫ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
আরও পড়ুন
আফজাল করিম বলেন, ২০০৭ সালে আমাদের ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি ছিল ছয় হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। এখন তা কমতে কমতে চার হাজার ৪০০ কোটি টাকায় নেমেছে। ভবিষ্যতে আরও কমানো হবে।
তিনি জানান, ২০২৩ সালে সুদ থেকে ৮২৭ কোটি টাকা আয় করেছে সোনালী ব্যাংক। অন্যদিকে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যত ঋণ বিতরণ হয়, তার ১৫ শতাংশই সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করা হয় বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
এসআই/কেএ