ঠিকাদারসহ সব লাইসেন্সে রিটার্ন বাধ্যতামূলক হচ্ছে
করের আওতা বৃদ্ধি ও আয়কর ফাঁকি বন্ধ করতে মোটরযান, নৌ-যান, সব ধরনের ট্রেড লাইসেন্স ও ঠিকাদার তালিকাভুক্তি কিংবা নবায়নে আয়কর রিটার্ন বাধ্যতামূলক করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে সেতু ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, নৌ-পরিবহন এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়সহ ১০টি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম স্বাক্ষরিত চিঠির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ৩১ মার্চ এনবিআর থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠিগুলো পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, রাজস্ব আহরণের অন্যতম প্রধান উৎস হলো আয়কর। চলতি বছরেও কেবলমাত্র আয়কর খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআর আপনার সক্রিয় সহযোগিতা কামনা করছে। কর আদায়ের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে আয়কর রিটার্ন ও উৎসে কর কর্তন বেগবান করার লক্ষ্যে গত ১৫ মার্চ ১০টি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এনবিআরের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভার পর্যালোচনায় দেখা যায়, কোনো পণ্য সরবরাহের চুক্তি ও সেবাদানের ক্ষেত্রে কিংবা দরপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে ইলেকট্রনিক ট্যাক্স আইডেনটিফিকেশন নম্বর (ই-টিআইএন) সার্টিফিকেট দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। একইভাবে ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন, মোটরযান রেজিস্ট্রেশন ও নবায়ন, নৌ-যান রেজিস্ট্রেশন ও নবায়ন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের তালিকাভুক্তি ও নবায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও ই-টিআইএন সনদপত্রের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
কিন্তু দেখা গেছে, উল্লেখযোগ্য একটি অংশ আয়কর রিটার্ন দাখিল করেন না। রিটার্ন দাখিল না করেই রেজিস্ট্রেশন কিংবা নবায়ন করছেন। কিন্তু আয়কর আইন অনুসারে ই-টিআইএন থাকলে রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক বা দাখিল না করার সুযোগ নেই। অসাধু একটি চক্র আয় গোপন ও কর না দেওয়ার জন্যে রিটার্ন দাখিল থেকে বিরত থাকছেন।
সভায় বলা হয়েছে, দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ঠিকাদারসহ উল্লেখিত সব ক্ষেত্রে সর্বশেষ করবর্ষের জমা দেওয়া আয়কর রিটার্নের প্রাপ্তিস্বীকার পত্র দাখিলের বাধ্যবাধ্যকতা নীতিমালায় অন্তর্ভুক্ত করলে করনেট বৃদ্ধি পাবে। এসব ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা। এছাড়া আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি এবং আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়।
আরএম/ওএফ