হরতাল-অবরোধে দৈনিক ক্ষতি সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা
করোনা মহামারির ধকল সামলে ওঠার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এমনিতেই দেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। তার ওপর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে কেন্দ্র করে হরতাল-অবরোধ শুরু হয়েছে। যা দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ক্ষতিকর হবে বলেছেন ব্যবসায়ীরা।
তারা বলছেন, হরতাল কিংবা অবরোধে দিনে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়। তাই আমরা এরকম হরতাল-অবরোধ চাই না।
জানতে চাইলে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা চাই সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে যেকোনো সরকার ক্ষমতায় আসুক। হরতাল কিংবা অবরোধে দিনে সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়। সুতরাং আমরা চাই দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। আমরা হরতাল কিংবা অবরোধ চাই না। হরতাল কিংবা অবরোধ অর্থনীতির জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এতে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন।
মেট্রোপলিটান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দেশের অর্থনীতি এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। এই অবস্থায় হরতাল-অবরোধ আমাদের জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনবে না। আমরা চাই একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ।
তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, হরতাল-অবরোধের কারণে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিদেশিদের কাছে খারাপ হয়। নানা কারণে রপ্তানি অর্ডার কমছে। এখন যদি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা না ফিরে হরতাল-অবরোধ অব্যাহত থাকে, তবে দেশের অর্থনীতি নেতিবাচক ধারায় যাবে।
প্রায় একই কথা বলেন বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম। তিনি বলেন, আমরা সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। নতুন করে কোনো রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা চাই না।
বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, নানা কারণে চরম সংকটের মধ্য দিয়ে চলছে পোশাক খাত। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীরা অবশ্যই শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চান। আমরা কোনো ধ্বংসাত্মক রাজনীতি চাই না।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, বিনিয়োগের পূর্বশর্ত হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এটা ঠিক না দেশ ঠিক থাকবে না। রাজনীতিবিদের উচিত সংঘাতের দিকে না গিয়ে স্থিতিশীল রাজনৈতিক পথ বেছে নেওয়া। তা না হলে অর্থনীতি আর সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এমআই/কেএ